ETV Bharat / state

Kali Puja Singur : মা সারদার মধ্যে কালীর দর্শন পেয়ে ডাকাত সর্দার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ডাকাতে কালীর

সিঙ্গুরের এই মাঠে মা সারদার মধ্যে মা কালীকে দেখেছিলেন ডাকাত সর্দার ৷ তারপর সেই রাতে তাঁকে খেতে দেন, আশ্রয় দেন ৷ এরপর স্বপ্নাদেশ পেয়ে ডাকাত সর্দার প্রতিষ্ঠা করেন ডাকাতে কালী ৷ এখন সেই পুজো চলছে ৷

http://10.10.50.85:6060///finalout4/west-bengal-nle/finalout/31-October-2021/13500936_wb_dakatkalifinal.mp4
সিঙ্গুরের ডাকাতে কালী
author img

By

Published : Oct 31, 2021, 7:04 PM IST

সিঙ্গুর, 30 অক্টোবর : সে বহু যুগ আগের কথা ৷ সিঙ্গুরের কাছে তেলেভোলার মাঠ দিয়ে দক্ষিণেশ্বরে যাচ্ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ-পত্নী মা সারদা ৷ রাতে মাঠে তিনি ডাকাতদের সম্মুখীন হন ৷ কিন্তু ডাকাতরা তাঁর মধ্যে স্বয়ং মা কালীকে দেখতে পান ৷ রাতে তাঁকে মেয়ের মতো স্নেহ করে খেতে দেন, আশ্রয় দেন ডাকাত ও ডাকাতের স্ত্রী ৷ সেই মাঠে পরে ডাকাত সর্দার প্রতিষ্ঠা করেন মা কালীকে ৷ এখনও চলছে সিঙ্গুরের ডাকাত কালীর পুজো ৷

চাল কলাই ভাজা দিয়ে পুজো হয় সিঙ্গুরের ডাকাত কালীর । ডাকাতরা মা কালীর পুজো করে ডাকাতি করতে যেত । সিঙ্গুরের পুরুষোত্তমবাটি সে সময় ছিল জঙ্গলে ঘেরা । শোনা যায়, রঘু ডাকাত, গগন ডাকাতের ডেরা ছিল এখানে । সন্ধের পর সাধারণত ওই রাস্তা দিয়ে কেউ যাতায়াত করতেন না ।

কথিত আছে, সিঙ্গুরের ডাকাতে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় মায়ের স্বপ্নাদেশে । কোনও এক সময় পাশের গ্রামের চালকে বাটী গ্রামের মোড়ল, চাষের সামগ্রী নিয়ে শেওড়াফুলি হাটে যাচ্ছিলেন । গরুর পিঠে শস্য বস্তায় বেঁধে নিয়ে সিঙ্গুরের ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় ক্লান্ত অবসন্ন মোড়ল গাছের ছায়ায় বসে ঘুমিয়ে পড়েন । তখন মা কালী তাঁকে স্বপ্ন দেন বাড়ি ফিরে যেতে এবং ওই স্থানে তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে । মোড়ল বাড়ি ফিরে গিয়ে গ্রামের সবাইকে ডেকে ঘটনাটি বলেন । যে শস্যের বস্তা বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল মোড়ল, সেই বস্তায় সোনার মোহর পাওয়া যায় । তা দিয়ে একচালার ছোট মন্দির তৈরি হয় । বর্ধমানের রাজাকে মা স্বপ্ন দেন বড় মন্দির গড়ে পুজোর ব্যবস্থা করতে । বর্ধমানের রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে মায়ের পুজোর জন্য জমি দান করেন । সেবাইতও রাখা হয় । সেই সেবাইতের বংশধরেরা এখনও পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন । প্রথম থেকেই পুজোর ভোগে চাল কলাই ভাজা দেওয়া হয় আর কারণ দিয়ে । বর্তমানে মন্দির সংস্কার করা হয়েছে । সারা বছর এখানে ভিড় থাকে । তারকেশ্বরে বাবার মাথায় জল ঢালার সময় ভক্তরা এই মন্দিরে পুজো দিয়ে যান ।

আরও পড়ুন : Kali Puja 2021 : প্রতিমা নির্মাণ থেকে নিরঞ্জন, সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয়ের মধ্যে সম্পন্ন হয় রায়গঞ্জের কালীপুজোয়

কালীবাড়ির সেবাইত রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণ দেবকে দেখতে যাওয়ার সময় মা সারদার পথ রুখে দাঁড়িয়েছিল ডাকাতরা । কিন্তু তাঁর মধ্যে মা কালীকে দেখতে পেয়ে তাঁকে নিজের মেয়ের মতো যত্ন করেন । তারা সেই সময় চাল কড়াই ভাজা খেতে দিয়েছিল সারদা দেবীকে । সেই থেকে কালীপুজোর দিন মূল প্রসাদ চাল কড়াই ভাজা দিয়ে পুজো হয়ে আসছে । প্রতিদিনই মায়ের পুজো হয় ।" তিনি জানান, কালীপুজোর দিন রাত বারোটা নাগাদ মূল পুজো শুরু হবে । এখানে বলি প্রথার প্রচলন রয়েছে এখনও । প্রথমে সেবাইত বলিদান হবে, তারপর চালকেবাটির মোড়লদের ছাগ বলি হয় ।

সিঙ্গুরের ডাকাত কালীর ঘটের জল একবারই পাল্টানো হয় । নিয়ম আছে গঙ্গা থেকে বর্গক্ষত্রিয় (বাগদি) রাই গিয়ে ঘটের জল নিয়ে আসে । আগে সেই মাটির মূর্তিতেই পুজো হয়ে আসছে । ডাকাতরা মায়ের যেরূপ দেখে ছিল, সেই রূপে পুজো হয় । মূর্তির পরিবর্তন হয় না, শুধু রঙ করা হয় ।

এক পুণ্যার্থী প্রজ্ঞা পারমিতা সিংহ রায় বলেন, "সিঙ্গুরের মা কালী খুব জাগ্রত । আমাদের রাজ্য-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ আসেন । মাঝে মধ্যেই আমরা আসি ।"

সিঙ্গুর, 30 অক্টোবর : সে বহু যুগ আগের কথা ৷ সিঙ্গুরের কাছে তেলেভোলার মাঠ দিয়ে দক্ষিণেশ্বরে যাচ্ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ-পত্নী মা সারদা ৷ রাতে মাঠে তিনি ডাকাতদের সম্মুখীন হন ৷ কিন্তু ডাকাতরা তাঁর মধ্যে স্বয়ং মা কালীকে দেখতে পান ৷ রাতে তাঁকে মেয়ের মতো স্নেহ করে খেতে দেন, আশ্রয় দেন ডাকাত ও ডাকাতের স্ত্রী ৷ সেই মাঠে পরে ডাকাত সর্দার প্রতিষ্ঠা করেন মা কালীকে ৷ এখনও চলছে সিঙ্গুরের ডাকাত কালীর পুজো ৷

চাল কলাই ভাজা দিয়ে পুজো হয় সিঙ্গুরের ডাকাত কালীর । ডাকাতরা মা কালীর পুজো করে ডাকাতি করতে যেত । সিঙ্গুরের পুরুষোত্তমবাটি সে সময় ছিল জঙ্গলে ঘেরা । শোনা যায়, রঘু ডাকাত, গগন ডাকাতের ডেরা ছিল এখানে । সন্ধের পর সাধারণত ওই রাস্তা দিয়ে কেউ যাতায়াত করতেন না ।

কথিত আছে, সিঙ্গুরের ডাকাতে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় মায়ের স্বপ্নাদেশে । কোনও এক সময় পাশের গ্রামের চালকে বাটী গ্রামের মোড়ল, চাষের সামগ্রী নিয়ে শেওড়াফুলি হাটে যাচ্ছিলেন । গরুর পিঠে শস্য বস্তায় বেঁধে নিয়ে সিঙ্গুরের ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় ক্লান্ত অবসন্ন মোড়ল গাছের ছায়ায় বসে ঘুমিয়ে পড়েন । তখন মা কালী তাঁকে স্বপ্ন দেন বাড়ি ফিরে যেতে এবং ওই স্থানে তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে । মোড়ল বাড়ি ফিরে গিয়ে গ্রামের সবাইকে ডেকে ঘটনাটি বলেন । যে শস্যের বস্তা বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল মোড়ল, সেই বস্তায় সোনার মোহর পাওয়া যায় । তা দিয়ে একচালার ছোট মন্দির তৈরি হয় । বর্ধমানের রাজাকে মা স্বপ্ন দেন বড় মন্দির গড়ে পুজোর ব্যবস্থা করতে । বর্ধমানের রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে মায়ের পুজোর জন্য জমি দান করেন । সেবাইতও রাখা হয় । সেই সেবাইতের বংশধরেরা এখনও পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন । প্রথম থেকেই পুজোর ভোগে চাল কলাই ভাজা দেওয়া হয় আর কারণ দিয়ে । বর্তমানে মন্দির সংস্কার করা হয়েছে । সারা বছর এখানে ভিড় থাকে । তারকেশ্বরে বাবার মাথায় জল ঢালার সময় ভক্তরা এই মন্দিরে পুজো দিয়ে যান ।

আরও পড়ুন : Kali Puja 2021 : প্রতিমা নির্মাণ থেকে নিরঞ্জন, সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয়ের মধ্যে সম্পন্ন হয় রায়গঞ্জের কালীপুজোয়

কালীবাড়ির সেবাইত রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণ দেবকে দেখতে যাওয়ার সময় মা সারদার পথ রুখে দাঁড়িয়েছিল ডাকাতরা । কিন্তু তাঁর মধ্যে মা কালীকে দেখতে পেয়ে তাঁকে নিজের মেয়ের মতো যত্ন করেন । তারা সেই সময় চাল কড়াই ভাজা খেতে দিয়েছিল সারদা দেবীকে । সেই থেকে কালীপুজোর দিন মূল প্রসাদ চাল কড়াই ভাজা দিয়ে পুজো হয়ে আসছে । প্রতিদিনই মায়ের পুজো হয় ।" তিনি জানান, কালীপুজোর দিন রাত বারোটা নাগাদ মূল পুজো শুরু হবে । এখানে বলি প্রথার প্রচলন রয়েছে এখনও । প্রথমে সেবাইত বলিদান হবে, তারপর চালকেবাটির মোড়লদের ছাগ বলি হয় ।

সিঙ্গুরের ডাকাত কালীর ঘটের জল একবারই পাল্টানো হয় । নিয়ম আছে গঙ্গা থেকে বর্গক্ষত্রিয় (বাগদি) রাই গিয়ে ঘটের জল নিয়ে আসে । আগে সেই মাটির মূর্তিতেই পুজো হয়ে আসছে । ডাকাতরা মায়ের যেরূপ দেখে ছিল, সেই রূপে পুজো হয় । মূর্তির পরিবর্তন হয় না, শুধু রঙ করা হয় ।

এক পুণ্যার্থী প্রজ্ঞা পারমিতা সিংহ রায় বলেন, "সিঙ্গুরের মা কালী খুব জাগ্রত । আমাদের রাজ্য-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ আসেন । মাঝে মধ্যেই আমরা আসি ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.