ব্যান্ডেল, 25 ডিসেম্বর: আজ বড়দিন ৷ সমস্ত রীতি মেনে যিশুর জন্মদিন পালন করা হল ব্যান্ডেল চার্চে (Bandel Church) । রাতে বিশেষ প্রার্থনা বা মিডনাইট মাসে (Midnight Mass) অংশ নিয়েছেন চার্চের সদস্যরা । হয়েছে ক্যারোলও (Christmas 2022) ।
যিশুর বাণী ও জন্মবৃতান্ত শোনানো হচ্ছে চার্চে ৷ যিশুর জন্মদিনের প্রার্থনাতে অংশ নেন বহু খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষেরা । উপস্থিত ছিলেন হুগলি লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ রত্না দে নাগ ও চন্দননগরের কমিশনার অমিত পি জাভালগি-সহ আরও অনেকে ।
এই চার্চ শুধুমাত্র খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় নয়, বস্তুত এটি রাজ্যের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র এবং দর্শনীয় স্থান ৷ সারাবছরই দেশ, এমনকী বিদেশেরও বহু পর্যটক ও পুণ্যার্থী এই গির্জায় আসেন ৷ ভিড় বাড়ে শীতের মরশুমে ৷ তবে সবথেকে বেশি ভিড় হয় বড়দিনের সময় ৷ মাঝে দু'বছর করোনার জন্য উৎসবেও তালা পড়েছিল ৷ কিন্তু, এবার এখনও পর্যন্ত ভারতের করোনা পরিস্থিতি নাগালেই রয়েছে ৷ তাই আবারও ক্রিসমাসের সাজে সেজে উঠেছে ব্যান্ডেল চার্চ ৷ চার্চের বাইরেই তৈরি করা হয়েছে গোশালা ৷ কথিত আছে, যিশু খ্রিস্টের জন্ম হয়েছিল গোয়ালেই ৷ সেই কারণেই এই আয়োজন ৷ প্রভু যিশুর আবির্ভাব থেকে শুরু করে তাঁর জীবনের নানা সময়ের কল্প-কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে চার্চের মাঠের এই সাজসজ্জায় (Christmas Celebration) ৷
বড়দিনের প্রথম প্রার্থনা শুরু হয় 24 ডিসেম্বর মাঝরাতে ৷ এই উপলক্ষে অসংখ্য মানুষ জমায়েত করেন এখানে ৷ ইতিমধ্যেই গোটা চত্বর আলোকমালায় মুড়ে ফেলা হয়েছে ৷ একইসঙ্গে, বাড়ানো হয়েছে চার্চ ও সংলগ্ন এলাকার নিরাপত্তা ৷ মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশকর্মী ৷ চার্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, 25 ডিসেম্বর এবং আগামী 1 জানুয়ারি চার্চের ভিতর সাধারণের প্রবেশাধিকার থাকবে না ৷ তবে, বাকি দিনগুলিতে সর্বসাধারণের জন্য চার্চের দরজা খোলাই থাকছে ৷ 25 ডিসেম্বর চার্চ চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড় ৷
আরও পড়ুন: বড়দিনে রঙিন ব্যান্ডেল চার্চ, মিডনাইট মাসের আগেই উপচে পড়ল ভিড়
প্রসঙ্গত, 1599 সালে পর্তুগিজ আমলে তৈরি হয়েছিল এই ব্যান্ডেল চার্চ ৷ এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন বহু ইতিহাস ৷ মুঘল সম্রাট শাহজাহান ব্যান্ডেল চার্চ আক্রমণ করেছিলেন ৷ সেই সময় চার্চের তৎকালীন ফাদার ও খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের নির্মম মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ৷ বলা হয়, মত্ত হাতির পায়ে পিষে মারা হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ৷ কিন্তু, সেই মত্ত হাতিকে যখন ফাদারের সামনে নিয়ে আসা হয়, তখন সেই হাতি তাঁকে আক্রমণ করার বদলে শুঁড় তুলে অভিবাদন করে ! এতে স্তম্ভিত হয়ে যান স্বয়ং সম্রাট ৷ তিনি এই ধর্মস্থানের জন্য জমি এবং অর্থ দান করেন ৷ পরবর্তীকালে দ্য বেসিলিকা অফ দ্য হোলি রোজারির স্বীকৃতি পায় এই চার্চ ৷
আরও পড়ুন: বড়দিনে আলোর রোশনাইয়ে ভাসল তিলোত্তমার অ্যাংলো পাড়া