হুগলি, 11 জুলাই: রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট মিটেছে ৷ প্রায় সব জেলাতেই হয়েছে পুনর্নির্বাচন ৷ এবার চলছে তারই গণনা ৷ আর সেই গণনাকেন্দ্রেই দেখা গেল রীতিমতো যুদ্ধের আবহ ৷ হুগলি ও বীরভূমে কয়েকটি গণনাকেন্দ্রে বাংকার বানিয়ে প্রহড়ায় আধা সেনা ৷ অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতেই এই বাংকার তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷
ভোটের দিন এবং পুনর্নির্বাচনের দিনও চরম অশান্তির ঘটনা ঘটেছে রাজ্যজুড়ে ৷ ভোটের দিনই প্রাণ গিয়েছে 18 জনের ৷ আর তারপরই পুনর্নির্বাচনে প্রায় প্রতি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট করিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ এবার মঙ্গলবার গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বেও রাখা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ৷ হুগলির দুটি এবং বীরভূমের নানুরে গণনা কেন্দ্রের বাইরে দেখা গেল রীতিমতো বাংকার বানিয়ে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রহরায় মোতায়েন রয়েছেন আধাসেনা জওয়ানরা ৷ হুগলির আরামবাগ এবং পোলবার দুটি কেন্দ্রে এই বাংকার বানিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷ গণনা কেন্দ্রের বাইরে টহল দিতেও দেখা গিয়েছে বাহিনীকে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, সাধারণত স্পর্শকাতর কেন্দ্রের সামনেই এই বাংকার তৈরি করা হয়েছে ৷
সাধারণত অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু বা এলাকার ক্ষেত্রেই এই ধরণের বাংকার বানাতে দেখা যায় সেনা বা পুলিশকেও ৷ এদিন হুগলির দুটি গণনা কেন্দ্রেই দেখা গেল এই বাংকার করে পাহারায় মোতায়েন রয়েছে বাহিনী ৷ তারপরও অবশ্য বেশ কিছু জায়গায় বিরোধী দলের এজেন্টদের অভিযোগ গণনা কেন্দ্রে তারা ঢুকতে পারেননি। ধনিয়াখালী ও জাঙ্গিপাড়ার কেন্দ্রে বিরোধীরা ঢুকতে শাসকদলের লোকজন বাধা দেয় বলে অভিযোগ। যার জেরে, পথ অবরোধ করে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকরা। এখনও পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় সিপিএম, বিজেপি ভালো ফল করলেও তৃণমূলের প্রার্থী জয়ের সংখ্যাটাই বেশি বলেও প্রাথমিক খবর মিলেছে।
হুগলি জেলায় 18টি ব্লকের মধ্যে মোট পঞ্চায়েত 207টি ৷ এর মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্য়া তিন হাজার 880টি। পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন সংখ্যা 619টি। এবং জেলা পরিষদে মোট আসন 53টি। এদিন শুরু থেকেই নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে গণনাকেন্দ্র। কেন্দ্রের সামনে মোতায়েন রয়েছে আধা সেনাও। ধনিয়াখালির কিষাণ মান্ডিতে চলছে ভোট গণনার কাজ ৷ সেখানেও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বিজেপি-র অভিযোগ, এখানে বিজেপি এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাদের মারধর করে গণনা কেন্দ্র থেক বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ বিজেপির। এরপরই চুঁচুড়া তারকেশ্বর 17 নম্বর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাস্থলে আসেন বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার।
আরও পড়ুন: গণনার দিন ভাঙড়ে রাজ্যপাল, ভোট-হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে সিভি আনন্দ বোস
অন্যদিকে, জাঙ্গিপাড়ায় ভোট গণনা কেন্দ্রে বিরোধী এজেন্টদের ঢুকতে না-দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ৷ আইএসএফ-এর অভিযোগ, গণনার দিনও কার্যত ভোট লুঠ করছে তৃণমূল। এর প্রতিবাদে ফুরফুরা শরিফ তালতলা হাটে রাস্তা অবরোধ আইএসএফ-এর।