চুঁচুড়া, 10 জনুয়ারি : চিকিৎসার নামে দৈহিক অত্যাচারের সাক্ষী থাকল চুঁচুড়ার এক বাসিন্দা । পেটে ব্যথা নিয়ে 23 ডিসেম্বর চন্দননগরের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভরতি হন শোভন সাধু(62) । চুঁচুড়ার তোলাফটকে বাড়ি । নার্সিংহোমে ভরতি করা সময় তাঁর কোরোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে । পরে আর্থিক সমস্যার কারণে তাঁকে অন্য একটি চুঁচুড়ার নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে কোরোনা ধরা পড়ায় ভরতি না নিয়ে কোভিড নার্সিংহোমে রেফার করা হয় । কোভিড নার্সিংহোমের চিকিৎসকরা শোভনবাবুর হাতে ও পায়ে নৃশংস ভাবে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার গভীর ক্ষত দেখতে পান । তাঁর গায়ে বেশ কিছু জায়গায় অসংখ্য কালসিটে দেখা যায় । তা দেখে হতবাক তাঁর স্ত্রী কাকলি সাধুও । স্বামীকে এভাবে নির্যাতনের জন্য তিনি এসডিও ও সিএমওএইচ অফিসে প্রথমে ভরতি হওয়া নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান । মুখ্যমন্ত্রীকেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি ।
স্ত্রী কাকলি সাধু বলেন,"পেটের রোগের চিকিৎসার জন্য চন্দননগরের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয় । পরে কোরোনা রিপোর্টে নেগেটিভ আসে । জানুয়ারির 2 তারিখে ছাড়িয়ে আনি আর্থিক সমস্যার কারণে । পরে চুঁচুড়ার একটি নার্সিংহোমে ভরতি নিয়ে কোরোনা পজ়িটিভ হয় । সেখান থেকে কোরোনা নার্সিংহোমে ভরতি করিয়ে দেখি প্রথমে যেখানে ভরতি হয়েছিল সেখানে আমার স্বামীর উপর অত্যাচার করা হয় । ওই নার্সিংহোমে স্বামীকে সুস্থ করার বদলে বেঁধে রেখে অসুস্থ করে দেওয়া হয়েছে । পায়ে বেঁধে ফুলে ঘায়ের আকার হয়েছে । হাতে কালসিটে পরে গেছে । সারা রাত বেঁধে রেখেছিল । অনুরোধ করেও কিছু লাভ হয়নি । উলটে আমার অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে এখন কোথা থেকে খরচ জোগাব বুঝতে পারছি না । অনেক জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছি । আমি চাই আমার মতো আর কারওর সঙ্গে না হয় । আমি এর বিচার চাই ।
শোভন বাবু বলেন,"আমাকে শারীরিক অত্যাচার করেছে ওই নার্সিংহোম । আমি ওখান থেকে বারবার চলে আসতে চাইলেও ছাড়া হয়নি । আমার স্ত্রী দেখা করতে চাইলেও কোন ভ্রূক্ষেপ করেনি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ । আমি চাই এর বিচার হোক ।"
আরও পড়ুন : যুবকের মৃত্যু ঘিরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, নার্সিংহোমে ভাঙচুর
ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে নীলাঞ্জনা মুখোপাধ্যায় বলেন,"আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনেছি । সঠিক তদন্ত হোক আমরা চাই । জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি আমাদের আস্থা আছে । জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে জানান হয়েছে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে । তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।