চুঁচুড়া, 18 জানুয়ারি: কারও বয়স 65 বছর । আবার কারও 71 বছর। এই বয়সেও প্রাথমিক স্কুলে চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেলেন হুগলির 62 জন । আরও 4 জনের নামে নিয়োগপত্র থাকলেও তাঁদের মৃত্যু হয়েছে আগেই । সকলের প্রশ্ন, অবসরের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে ৷ এখন এই নিয়োগপত্র নিয়ে কী করবেন? বৃহস্পতিবার এই নিয়েই শোরগোল পড়ে গিয়েছে হুগলিতে ।
নিয়োগপত্র পেয়ে পাণ্ডুয়ায় সার্কেল অফিসে যোগ দিতে আসেন 71 বছর বয়সি অচিন্ত্য আদক । তাঁর কথায়,"আমরা 1986 সাল থেকে মামলা করে আসছি হাইকোর্টে । একাধিক বার রায় হলেও বামফ্রন্ট আমলে চাকরি হয়নি । 2023 সালের 20 ডিসেম্বর আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে আদালত । তৎকালীন সময়ে বেসিক ট্রেনিং করলে চাকরি দেওয়ার নিয়ম ছিল। সেই সময় সরকারি নিয়মকানুন মানা হয়নি । এর বিরুদ্ধে মামলা করে এই জানুয়ারি মাসে আমরা নিয়োগপত্র পেয়েছি । 71 বছর বয়সে কেন নিয়োগ করল আমরা জানি না । আমরা ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলাম। অবসরের সময় পেরিয়ে গিয়েছি কীভাবে কাজ করব বুঝতে পারছি না ।"
আদালতের নির্দেশেই হুগলির প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ মোট 66 জনকে নিয়োগপত্র দিয়েছে । অবসরের সময় প্রবীণদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিক্ষক সংগঠন । সরকারের অকর্মণ্যতাকেই দায়ী করেছে বিজেপি । প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, 2023 সালের 20 ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেয় চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করার। সংসদের দাবি, আদালতের নির্দেশে আইন অনুযায়ী নিয়োগ করা হয়েছে ।
এই নিয়ে সুর চড়িয়েছে এবিপিটিএর কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহন পণ্ডিত । তিনি বলেন, "সারা ভারতবর্ষে এই ধরনের ঘটনা হয়নি। অবসরের বয়স পেরিয়ে যাওয়ার পর চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে। সরকারি চাকরির অবসরের বয়স হল 60 বছর । সেখানে 65-70 বছর বয়সিদের চাকরি দেওয়া হয়েছে । অনেকেই আমাদের ফোন করছেন । প্রধান শিক্ষকরা তাঁদের কাজে যোগ দিতে দেননি । 1983 সালে শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন কিন্তু চাকরি পাননি । তারা আদালতে মামলা করেছিলেন । 2014 সাল থেকে তারা এফেক্ট পাবেন । চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরই চাকরি চলে যাবে । শোনা যাচ্ছে, 50 লক্ষ টাকা করে পাবেন । এ এক অভূতপূর্ব ঘটনা । আমরা তদন্ত চাই বিষয়টার সত্য উদঘাটিত হোক ।"
বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য স্বপন পাল বলেন,"মারা গিয়েছেন এমন লোককেও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে । বাকিদের কারওরই চাকরির বয়স নেই । কেমন অকর্মণ্য সরকার চলছে এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে । কার মৃত্যু হয়েছে এবং কে জীবিত রয়েছেন সরকারের কাছে সেই তথ্য নেই। হাইকোর্টে শিক্ষা সংসদের আইনজীবী ছিলেন । সেখানে কেন আপডেট তথ্য দেওয়া হয়নি ? জনগণের টাকা এইভাবে অপচয় হচ্ছে ।" যদিও হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন শিল্পা নন্দী এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চান না । যা বলার পরে বলবেন বলে জানিয়েছেন । হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় জানান, মহামান্য হাইকোর্টের রায়কে কার্যকর করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন :