দার্জিলিং, 27 মে: সবুজ ঘেরা জঙ্গল। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি জনপথ। তারই মাঝে আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাকিয়ে ছুটে চলে শৈলরানির অন্যতম আকর্ষণ হেরিটেজ টয়ট্রেন। শৈলরানি দার্জিলিংয়ের মুকুট এই টয়ট্রেন। যার টানে দেশ থেকে বিদেশের পর্যটকরা ছুটে আসেন। আর এই বছর রেকর্ড পর্যটক টেনেছে টয়ট্রেন। আর এবার সেই টয়ট্রেনের পরিষেবা আরও একধাপ উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করল রেলমন্ত্রক। পরিবেশ দূষণরোধের পাশাপাশি যাত্রী পরিষেবাকে আরও উন্নত করবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের অধীন গুয়াহাটি থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত ইলেকট্রিফিকেশন বা বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে বিদ্যুতের মাধ্যমেই ছুটছে ট্রেন। পাল্লা দিয়ে বিদ্যুতের গতির মতোই বেড়েছে ট্রেনের গতি। এবার সেইভাবেই টয়ট্রেনকেও বিদ্যুতে চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে রেল মন্ত্রক। ইতিমধ্যে টয়ট্রেন পরিষেবাটিও যাতে বিদ্যুতে দেওয়া যায় সেই উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি দার্জিলিংয়ের অপরূপ পরিবেশ দূষণ রোধে হাইড্রোজেন জ্বালানিতে টয়ট্রেন চালানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই দুইয়ের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আর তার ছাড়পত্রের পরই শুরু হয়েছে সার্ভের কাজ। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী দু'বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও হাইড্রোজেন জ্বালানিতে ছুটবে হেরিটেজ টয়ট্রেন।
আরও পড়ুন: বড়দিনের আগে বাতিল জোড়া টয়ট্রেন, রেলের সিদ্ধান্তে চিন্তায় পর্যটন মহল
এই বিষয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম এসকে চৌধুরী বলেন, "চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে দারুণ পর্যটক এসেছে। প্রায় 30 হাজার পর্যটক টয়ট্রেন চড়েছেন। 2021 সালে 1 লক্ষ 10 হাজার পর্যটক টয়ট্রেন চড়েছিলেন। 2022 সালে সেই সংখ্যা অনায়াসে পার হয়েছে। দেড় লক্ষ পর্যটক গত বছর টয়ট্রেন চড়েছেন। চলতি বছরে সেই সংখ্যাও আমরা পার করে রেকর্ড করব।" তিনি আরও বলেন, "আমরা ডিজেল ও স্টিম ইঞ্জিন আরও উন্নত করছি। পাশাপাশি আমাদের বিদ্যুৎ ও হাইড্রোজেন জ্বালানিতে টয়ট্রেন চালানোর ছাড়পত্র মিলেছে। ইলেকট্রিফিকেশনের জন্য সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, আগামী দু'বছরের মধ্যে ইলেকট্রিক ও হাইড্রোজেন জ্বালানিতে টয়ট্রেন ছুটবে।"
ডিএইচআর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেবক রঙপো রেলপথকেও খুব গুরুত্ব দিচ্ছে রেল মন্ত্রক। এদিকে, টয়ট্রেনের মতো হেরিটেজ শিরোপা ধরে রাখাও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ রেল মন্ত্রকের কাছে। বিদ্যুৎচালিত ইঞ্জিন হলে একদিকে যেমন ইঞ্জিনের ক্ষমতা বাড়বে, পাশাপাশি অনেক কমবে যাত্রার সময়েও। কমবে পরিবেশ দূষণও। বর্তমানে এনজেপি থেকে তিনধারিয়া ও এনজেপি থেকে দার্জিলিং দু'জোড়া টয়ট্রেন চলে। এছাড়াও রয়েছে জঙ্গল টি সাফারি।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে ধস! 12 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত টয়ট্রেন পরিষেবা
অন্যদিকে, পাহাড়ে দশ জোড়া জয়রাইড চলে। স্টিম ইঞ্জিনের পরিবর্তে পাহাড়ে ও সাফারির মতো টয়ট্রেন পরিষেবাতেই হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার করতে চাইছে রেল কর্তৃপক্ষ। আর শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের মতো লং রুটের জন্য ইলেকট্রিক টয়ট্রেন চালাতে চাইছে ডিএইচআর। তা হলে সেই রুটে টয়ট্রেনের সংখ্যাও বাড়ানো সম্ভব ৷