শিলিগুড়ি, 1 অক্টোবর: অবশেষে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনকে হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষণ করে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন পরিদর্শন করেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম এসকে চৌধুরী। পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনকে সংরক্ষণের কথা জানান তিনি।
পরাধীন আমলে কলকাতার সঙ্গে শিলিগুড়িকে রেলপথের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে শিলিগুড়িতে তৈরি হয়েছিল টাউন স্টেশনটি। কিন্তু তারপর তিস্তা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। এখন জরাজীর্ণ ও বেহাল অবস্থায় অবহেলিত হেরিটেজ শিরোপাধারী এই স্টেশনটি। যেখানে পা পড়েছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধি, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু,মাদার টেরিজা ও বাঘাযতীনের মতো মণীষীদের। সম্প্রতি বিশ্ব পর্যটন দিবসে টাউন স্টেশনকে তুলে ধরতে কর্মসূচি রাখা হয়েছিল পর্যটন সংস্থার তরফে। ঐতিহাসিক এই স্টেশন রক্ষার্থে রেলকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় শিলিগুড়ি পৌরনিগম। এরপরই ওই ঐতিহাসিক টাউন স্টেশনের বর্তমান পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন রেলের উত্তর পূর্ব সীমান্তের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম এসকে চৌধুরী।
আরও পড়ুন: উত্তরে লাফিয়ে বাড়ল জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মৃত আরও 6
প্রাক স্বাধীনতার সময় 1778 সালে রেলপথের মাধ্যমে দক্ষিণবঙ্গকে জুড়তে ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন। প্রথম অবস্থায় শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে কিষাণগঞ্জ পর্যন্ত মিটারগেজ লাইন চলত। ন্যারোগেজ লাইন গেলখোলা পর্যন্ত যেত তিস্তাভ্যালি এক্সপ্রেস ট্রেন। এরপর তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনকালে সমতল থেকে পাহাড়ে পণ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে 1880 সালের 23 আগস্ট শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে কার্শিয়াং পর্যন্ত প্রথম টয়ট্রেন চলাচল শুরু হয়। 1881 সালে 4 জুলাই দার্জিলিং পর্যন্ত টয়ট্রেনের লাইনের কাজ সম্পন্ন হলে দার্জিলিং পর্যন্ত যাত্রা শুরু করে টয়ট্রেন। হেরিটেজ শিরোপার পরও চরম অবহেলায় ঐতিহাসিক এই রেল স্টেশন। শুক্রবার শিলিগুড়ির ঐতিহাসিক টাউন স্টেশন পরিদর্শন করেন ডিআরএম এসকে চৌধুরী। এদিন তিনি টাউন স্টেশনে পৌঁছে টাউন স্টেশনের বর্তমান হাল হকিকত সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কথা বলেন আধিকারিকদের সঙ্গে। ঘুরে দেখেন স্টেশনের চারপাশের এলকা। টাউন স্টেশন পরিদর্শন শেষে সংবাদমাধ্যমকে ডিআরএম বলেন, "হেরিটেজ স্টেশনটি সংরক্ষণ করে সাজানো হবে। এছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে স্টেশনের উন্নয়ন করা হবে। রেলের বেশকিছু জমিদখল হয়ে রয়েছে। সেই দখল হওয়া জমি উদ্ধার করা হবে।"