শিলিগুড়ি, 7 জানুয়ারি: একে পানীয় জলের অভাব (Drinking Water Crisis) । তার উপরে শীতকালে সেই সমস্যা আরও বেশি প্রকট হয় । শহরবাসীদের জন্য যে পরিমাণ জল শিলিগুড়ি পৌরনিগমের তরফে সরবরাহ করা হয় তা পর্যাপ্ত নয় । ফলে বড় জলের প্রকল্প ছাড়া সেই অভাব মেটানো কোনওভাবেই সম্ভব নয় । এই অবস্থায় শিলিগুড়ি পৌরনিগমে পালাবদলের পর পানীয় জলের সমস্যা মেটানোই এখন মূল লক্ষ্য পৌর বোর্ডের । কিন্তু বাঁধ সাধে বরাদ্দ ।
কেন্দ্র সরকারের বরাদ্দ ছাড়া কোনওভাবেই বড় প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব নয় । আর ইতিমধ্যে শিলিগুড়িতে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে মিলেছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ ৷ কিন্তু সেই বরাদ্দ নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জলঘোলা । শুরু হয়েছে মেয়র ও বিধায়কের মধ্যে চরম তরজা (Mayor and MLA spar over allocation for drinking water project) । আম্রুত প্রকল্পের অধীনে 500 কোটি টাকায় চালু হচ্ছে নতুন রিজার্ভার । কেন্দ্রের আম্রুত প্রকল্পের আওতায় পানীয় জল গজলডোবা ও ফুলবাড়ি থেকে আনা হবে । আর তা চালু হলেই শহরবাসী পানীয় জলের কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে ।
শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক (MLA) শংকর ঘোষের দাবি, দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তার উদ্যোগেই ওই প্রকল্পের সুবিধা পেতে চলেছে শিলিগুড়ি । পালটা মেয়র গৌতম দেবের (Mayor Goutam Deb) দাবি, একুশের শেষের দিকে এই প্রকল্পটি নিয়ে একাধিক বৈঠক করে রাজ্য ৷ তারই সুফল বরাদ্দ টাকা । আর প্রকল্পের মোট খরচের 67 শতাংশ রাজ্য বরাদ্দ করেছে । বাকিটা অংশটা কেন্দ্র দিয়েছে । এরপর বিধায়কের পালটা দাবি, মেয়র বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন । 20 শতাংশ অর্থ দেবে রাজ্য । আর বাকি 80 শতাংশটা দেবে কেন্দ্র । যদি 67 শতাংশ টাকা রাজ্য দিয়ে থাকে তবে কাজ এখনও পর্যন্ত কেন শুরু করেনি তৃণমূল সরকার ?
শীত পড়তেই পানীয় জলের কষ্টে ভুগছে শহরের একটা বড় অংশ । মাঝে মধ্যেই জল সরবরাহ বন্ধ থাকে শহরের একাধিক ওয়ার্ডে । যার ফলে ক্ষোভে ফুসছে শহরবাসী । এবারে এই প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা ! এদিকে, মেয়র ও বিধায়কের বরাদ্দ নিয়ে তরজায় যেন আটকে পড়বে না তো শহরের বহু প্রতীক্ষিত পানীয় জল প্রকল্প ? সেই আশংকায় রয়েছেন বাসিন্দারা ৷
আরও পড়ুন: পানীয় জল না-মেলায় বাগডোগরায় বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের
মেয়র জানান, প্রথম দফার টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শেষ । দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু হবে । শিলিগুড়ি শহরবাসীদের 47টি ওয়ার্ডের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে 80 মিলিয়ন লিটার পানীয় জল সরবরাহের প্রয়োজন । কিন্তু বর্তমানে মাত্র 50 মিলিয়ন লিটার জল সরবরাহ হয়ে থাকে । শীতকালে তিস্তার জলস্তর নেমে যাওয়ায় ফুলবাড়িতে রিজার্ভার তৈরি করে পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব নয় । সেই সমস্যা মেটাতে 25 কিলোমিটার দূরে থাকা গজলডোবা থেকে তিস্তার জল এনে তা পরিশ্রুত করে সরবরাহের প্রকল্পর কাজ শুরু হবে ।