দার্জিলিং, 28 অগাস্ট : প্রায় পাঁচ বছর ধরে ডাক্তার ছাড়াই চলছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র । নেই ফার্মাসিস্টও । তবে রোগীরা আসেন । ওষুধও নেন । ওষুধ দেন নার্স । এলাকাবাসীর কাছে নার্সরাই এখানে ডাক্তার । চিত্রটা দার্জিলিংয়ের সিংরিংতাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ৷
না আছে কোনও চিকিৎসক, না আছে ফার্মাসিস্ট । শুধুমাত্র আছেন তিনজন নার্স ৷ এইরকমভাবে চলছে দার্জিলিংয়ের সিংরিংতাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র । ডাক্তার না থাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে AVS ইঞ্জেকশন, ARV থাকে না । ফলে সাপ ও কুকুর কামড়ালে এলাকাবাসীর ভরসা আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা দূরে দার্জিলিং জেলা হাসপাতাল । তাতেও বিপত্তি । একেই তো যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো নয় । তার উপর গাড়ি না মেলায় কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো অবস্থা সিংরিংতাম সহ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের । ফলে পথেই মৃত্যু হয় অনেকের ।
স্থানীয় বাসিন্দা রবীন্দ্র রানা, জীবন থুলুং, সঞ্জয় গুরুংরা জানিয়েছেন, এলাকার বাসিন্দারা খুবই সমস্যায় রয়েছেন । সিংরিতাম থেকে কোথাও যেতে হলে গাড়ি পাওয়া যায় না । সিংরিংতাম থেকে সকাল 8টা 30-এ দার্জিলিংয়ের উদ্দেশে এক-দুটি গাড়ি যায় । ওই গাড়ি ফিরে আসে বিকেলে । এছাড়া সকালে সিংরিংতামে যাওয়ার কোনও গাড়ি নেই । আর বিকেলে ফেরারও কোনও গাড়ি পাওয়া যায় না । দার্জিলিং থেকে জোড়বাংলো হয়ে ছয় মাইল হয়ে সিংরিংতামে যাওয়া যায় । পাশেই রাজ্যের পর্যটনস্থল লামাহাটা । অথচ এই এলাকার রাস্তার হাল বেহাল ৷ সমস্যায় পড়েন রোগীরা ৷
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স অলকা গুরুং বলেন, "গড়ে প্রতিদিন হাসপাতালে 35 জন করে রোগী আসেন । সাধারণত কাটা, আঘাত, জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া, ঘা, চুলকানির মতো রোগ নিয়ে আসেন তাঁরা । ডাক্তার না থাকায় অগত্যা আমাদেরই রোগী দেখে ওষুধ দিতে হয় । অথচ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী ভরতির জন্য বেড রয়েছে । রয়েছে লেবার রুম । সবই এখন নষ্ট হওযার জোগাড় । আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যও কেউ নেই । দিনে দু'জন D গ্রুপের স্টাফ থাকলেও রাতে নার্সদের একাই থাকতে হয় । নেই পুলিশ, এমন কী সিভিক ভলান্টিয়ারও ।"
অথচ এভাবেই চলছে দার্জিলিং পাহাড়ের চিকিৎসা পরিষেবা । কোথাও ডাক্তার আছে ৷ কোথাও নেই ৷ ভবিষ্যতে কি নিয়োগ হবে ডাক্তার ? আদৌ কি প্রশাসনের কানে যাবে এই কথা ? উত্তর অবশ্য ভবিষ্যৎই দেবে ৷