দার্জিলিং, ৪ এপ্রিল: গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না জিএনএলএফ। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি বিধায়ক তথা জিএনএলএফের প্রাক্তন মুখপাত্র নিরজ জিম্বা (GNLF will not participate in GTA elections, said Neeraj Zimba)।
সম্প্রতি পাহাড়ে সফরে গিয়ে পাহাড়ের উন্নয়নের স্বার্থে মে, জুন মাসের মধ্যে জিটিএ নির্বাচন করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। প্রত্যেকেই জিটিএ নির্বাচনে সায় দিয়েছে। শুধুমাত্র বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও জিএনএলএফ জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে। জিটিএ নির্বাচনের আগে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের দাবি করেছে মোর্চা। অন্যদিকে, কোনওভাবেই জিটিএ নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় জিএনএলএফ। জিএনএলএফের সুরে সুর মিলিয়েছে বিজেপিও। জিএনএলএফের নেতৃত্বের অভিযোগ, জিটিএ তৈরি করা হলেও এখনও দার্জিলিং হিল গোর্খা কাউন্সিল (ডিজিএসসি)-এর খাতেই বরাদ্দ আসে। আর পাহাড়ের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানই একমাত্র সমাধানের পথ।
অন্যদিকে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, "জিটিএ মানুষের দাবি পূরণ করতে পারেনি। সেজন্য স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করতে হলে রাজ্য সরকার ও রাজনৈতিক দল-সহ অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমাধান সূত্র বের করতে হবে।"
প্রসঙ্গত, 2012 সালে প্রথম জিটিএ নির্বাচন হয়েছিল। 2017 সালের পর জিটিএতে কোনও নির্বাচিত বোর্ড নেই ৷ গত পাঁচ বছর ধরে প্রশাসক দিয়ে কাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর জিটিএ নির্বাচনের পর দ্বিধাবিভক্ত পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলো । যেখানে হামরো পার্টি, ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, জন আন্দোলন পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস জিটিএ নির্বাচনের পক্ষে সায় দিয়েছে। অন্যদিকে, জিএনএলএফ, বিজেপি তার বিরোধিতা করেছে। পাশাপাশি বিমল গুরুংদের মোর্চার অবস্থানও এখন পরিষ্কার নয়।
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, দার্জিলিং পুরসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরই অবস্থান পরিবর্তন করেছে জিএনএলএফ ও মোর্চা। যেখানে মোর্চা তিনটি আসন পেয়েছে, সেই জায়গায় খাতাই খুলতে পারেনি জিএনএলএফ। আর এরপর জিটিএ নির্বাচন হলে পরাজয়ের আশঙ্কাতেই নির্বাচন চাইছে না ওই রাজনৈতিক দল মনে করা হচ্ছে। নিরজ জিম্বা বলেন, "আমরা চাই পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান হোক। আর সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমেই সম্ভব।"