দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি, 11 জানুয়ারি: হাইকোর্টে বড় ধাক্কা অজয় এডওয়ার্ডয়ের (Ajoy Edwards) হামরো পার্টির (Hamro Party)। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কেই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ । দার্জিলিং পৌরসভায় (Darjeeling Municipality) অনাস্থা ও অপসারণ প্রক্রিয়ায় কোনও ত্রুটি নেই বলে রায় দিয়েছে আদালত ৷ খারিজ হয়েছে হামরো পার্টির আবেদন ৷ আর হাইকোর্টের নির্দেশের পরই বিপাকে অজয় এডওয়ার্ডয়ের হামরো পার্টি ।
দার্জিলিং পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বোর্ড গঠন করেছিল অজয় এডওয়ার্ডয়ের নতুন রাজনৈতিক দল হামরো পার্টি । কিন্তু বোর্ড পরিচালনার নয় মাসের মাথায় আচমকাই দলে ভাঙন শুরু হয় । একে একে হামরো পার্টির ছয় কাউন্সিলর যোগ দেন জিটিএ (GTA) বা গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শাসক দল অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় (BGPM) ।
যার ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারান অজয় এডওয়ার্ডরা । এরপরই ক্ষমতা হারিয়ে আইনি পথে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অজয় এডওয়ার্ডরা । এদিকে হামরো পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতেই চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেলের অপসারণ ও অনাস্থা প্রস্তাব আনার প্রক্রিয়া শুরু করে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা বিজিপিএম । তারা দাবি করে, তৃণমূল কংগ্রেসের নিঃস্বার্থ সমর্থনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার । সেই মতো অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয় ।
এরপরই হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে (Jalpaiguri Circuit Bench) মামলা দায়ের করেন চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেল ও ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াংজি শেরপা । কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চের তরফে বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন, পৌরসভার চেয়ারম্যানের অপসারণের জন্য যে প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছিল, তা আইন মেনেই হয়েছিল । এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় হামরো পার্টি । কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চের তরফেও বুধবার সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কেই বহাল রাখা হয় ।
এই বিষয়ে সরকারি আইনজীবী বিক্রমাদিত্য ঘোষ বলেন, "চেয়ারম্যানের অপসারণের জন্য যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল তা সম্পূর্ণ যথাযথ । সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে কোনও ত্রুটি নেই ।" হামরো পার্টির আইনজীবী কুণালজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, "চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেল অপসারণের যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ আইন মেনে হয়েছে বলে আমাদের আবেদন খারিজ করা হয়েছে ।"
এই বিষয়ে জিটিএ-র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক তথা বিজিপিএমের সভাপতি অনিত থাপা বলেন, "আমরা যা করেছিলাম আইন মেনেই করেছিলাম । অজয় এডওয়ার্ডরা না মানলে আমাদের করার কিছু নেই । তাঁদের দলের কাউন্সিলররা নিজেদের ইচ্ছায় আমাদের দলে যোগ দিয়েছিলেন ।"
এই বিষয়ে হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড বলেন, "হাইকোর্টে আমরা পরাজিত হয়েছি ঠিকই ৷ তবে আমাদের আইনি লড়াই জারি থাকবে । আমরা প্রয়োজনে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হব ।"
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে পৌরসভার মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট দুলেন রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আগামী 16 জানুয়ারি নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করার জন্য । ইতিমধ্যে সেই নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: দার্জিলিং পৌরসভা অনিতের দখলে যেতেই পদত্যাগ বিনয় তামাংয়ের