শিলিগুড়ি, 4 ডিসেম্বর: মুখ্যমন্ত্রীর সফরকালীন স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠকের আয়োজন। তার জন্য পিছিয়ে গেল সুপার ডিভিশন ফুটবল লিগ। তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল ক্রীড়ামহল। আর এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে ময়দানে নেমেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
গতবারের মতো এইবারও শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সুপার ডিভিশন ফুটবল লিগের আয়োজন করেছিল শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ। কিন্তু সেই সময়েই উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 6 ডিসেম্বর সফরে আসছেন তিনি। পাহাড়-সমতল মিলিয়ে তাঁর টানটান কর্মসূচি। মাঝে রয়েছে ব্যক্তিগত কিছু কর্মসূচিও। আগামী 12 ডিসেম্বর ফিরে যাবেন তিনি ৷ তার আগে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক সারবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু করেছে পুলিশ ও প্রশাসনিক মহল।
স্টেডিয়ামে সভামঞ্চ বাঁধার কাজও শুরু হয়েছে। তার জেরে স্টেডিয়ামে আগে থেকে আয়োজন হওয়া ফুটবল লিগ বন্ধ করতে বাধ্য হলেন আয়োজকরা ৷ আর তাতেই ক্ষোভে ফুঁসছে ক্রীড়ামহল। শহরের একমাত্র এই স্টেডিয়ামে এর আগেও অরিজিৎ সিংয়ের কনসার্ট আয়োজন হওয়ায় কম জল ঘোলা হয়নি ৷ এমনকী অরিজিৎ সিং নিজেও কনসার্টে সেই কথা জানিয়েছিলেন। এতে স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো ও ময়দানের ক্ষতি হয়। কিন্তু তারপরেও কেন মুখ্যমন্ত্রীর সভার আয়োজন? প্রশ্ন তুলছে বিভিন্নমহল। আর এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছে রাজনৈতিকদলগুলো।
রবিবার স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর সভার আয়োজনের প্রতিবাদে মিছিল করে অ্যাথলেটিক্স লাভার অ্যাসোসিয়েশন। বিকেলে স্টেডিয়ামের সামনে বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই, ডিওয়াইএফআই। সোমবারও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে বিভিন্ন সংগঠনের ৷ শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, সভার সময় তিনি স্টেডিয়ামের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ করবেন। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খেলাধুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। সেখানে তাঁর সভার জন্য কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে খেলা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? এটা মানতে নারাজ অনেকেই।
শঙ্কর ঘোষ বলেন, "এমনিতেই স্টেডিয়ামের খারাপ অবস্থা। এখন সভা করে ময়দান নষ্ট করা হবে। কেন এই সভা স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হচ্ছে? উত্তরকন্যায় কেন করা হবে না ৷ তীব্র নিন্দা জানাই ৷" শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সভাপতি কুন্তল গোস্বামী বলেন, "এই সব লিগ পিছিয়ে গেলে অংশগ্রহণকারী দলের অনেক ক্ষতি হয়। এমনটা না-হলেই ভালো হত। কিন্তু কিছু করার নেই ৷ স্টেডিয়াম পৌরনিগমের অধীন।" শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, "একদিনের জন্য স্টেডিয়াম নেওয়া হচ্ছে। 24 ঘণ্টার মধ্যে আবার আগের রূপে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়াও আমরা কাওয়াখালি, উত্তরায়ন ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ তৈরি করে দেব বলেছি। বিজেপি অহেতুক এসবে মাথা ঘামাচ্ছে। এসব করলে কী করে বিজেপির হাত পা ভেঙে দিতে হয় তা জানা আছে ৷"
আরও পড়ুন: