বেলডাঙা, 14 ফেব্রুয়ারি: ভালোবাসার দিন। স্ত্রীকে এমন উপহার দিতে চাই, যা আর কেউ দিতে পারবে না। মনে মনে পণ করেছিলেন বেলডাঙার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। যেমন পণ তেমন কাজ ৷ বাড়ির ছাদে কাশ্মীর উপত্যকার টিউলিপ চাষ করে প্রথম একগোছা ফুল ভ্যালেন্টাইন্স ডে'তে স্ত্রীকে উপহার দিলেন তিনি।
সুদূর কাশ্মীর থেকে 14টি টিউলিপের বীজ আনিয়েছিলেন রূপেশ দাস। ইচ্ছে ছিল 14টি ফুল দিয়ে স্ত্রীকে ভালোবাসার উপহার দেবেন। কিন্তু 11টি ফুল ফুটেছে ৷ ছেলেকে সাক্ষী রেখে স্ত্রীর হাতে সমস্ত ফুল নিবেদন করে একসঙ্গে দীর্ঘ পথ চলার অঙ্গিকার করলেন রূপেশ।
![VALENTINES DAY 2025](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/14-02-2025/23541842_wb_cfb848.jpg)
বেলডাঙার কাছারিপাড়ায় বাড়ি সংলগ্ন ছোট বাগানে হিমাচলের আপেল ফলিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ৷ এবার ফুটিয়ে তুলেছেন টিউলিপ। নেদারল্যান্ডের টিউলিপ বাগান বিশ্বখ্যাত। কাশ্মীর উপত্যকায় টিউলিপ বাগান দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা সেখানে ভিড় জমান। কিন্তু এবার সেই টিউলিপ ফুল বেলডাঙায় বাড়ির ছাদে ফুটিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন নপুকুরিয়া নতুনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রূপেশ দাস। সেই টিউলিপ ফুল দেখতে প্রতিবেশী থেকে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা ভিড় জমাচ্ছেন।
![VALENTINES DAY 2025](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/14-02-2025/23541842_wb_cfb897.jpg)
রূপেশ বলেন, "এই প্রথম টিউলিপ ফুল হল। গতবছরই চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু গাছ হয়নি। এবারের ভ্যালেনটাইন্স-ডে উপলক্ষে স্ত্রীকে বিশেষ কিছু দেব বলে মনস্থির করেছিলাম। স্ত্রীর অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল টিউলিপ দেখবে। কিন্তু টিউলিপ দেখার জন্য কাশ্মীর যাওয়া ছাড়া তো উপায় নেই। তখনই ভাবলাম বাড়ির ছাদেই যদি টিউলিপ বাগান তৈরি করা যায়, কেমন হয় !
যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। তবে শীতপ্রধান দেশের ফুল এখানে হবে কি না, তা নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলেন রূপেশ। পড়াশোনা করে বিশেষ কৌশল প্রয়োগ করে টিউলিপ চাষ করবেন বলেই মনস্থির করেন। কাশ্মীর থেকে অনলাইনে অর্ডার করে বীজ আনিয়েছিলেন। 35 দিন আগে সেই বীজ বাড়ি সংলগ্ন বাগানে রোপণ করেন। তারপর 35 দিন সময় লাগল ফুল ফুটতে। তবে মাঝে দু'টি গাছ ইঁদুরে খেয়ে ফেলে। তখন বাকি 12টি গাছ মাটি থেকে তুলে টবে লাগিয়ে দেন। সেই টবেই ফুটেছে লাল ও হলুদ রংয়ের টিউলিপ।
![VALENTINES DAY 2025](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/14-02-2025/23541842_wb_cfb987978.jpg)
স্ত্রী রাজশ্রী প্রামাণিক বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। রাজশ্রী বলেন, "আমি খুশিতে আত্মহারা। আমি সাধারণত ছবি তুলি না। কিন্তু এক্ষেত্রে ফুল দেখে নিজেকে সামলাতে পারিনি। যেদিন প্রথম ফুল ফোটে আমিই প্রথম দেখতে পাই। তারপর স্বামীকে ডেকে দেখালাম। ও যে এতগুলি টিউলিপ আমাদের বাগানে ফুটিয়ে ফেলবে, বিশ্বাসই হচ্ছে না।"
রূপেশ দাস বলেন, "বাড়ি সংলগ্ন বাগানে বছর পাঁচেক ধরে গাছপালা লাগাই। দেড় কাঠা জায়গায় আপেল-সহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। শিক্ষকতার পাশাপশি গাছ লাগানো আমার শখ। 14টির মধ্যে 11টি টিউলিপ ফুটেছে। এখন গরম পড়ে গিয়েছে। ফুল আর হয়তো সাতদিন থাকবে ।" আরও আগে ফোটাতে পারলে 10-12 দিন বেশি ফুল থাকত বলেই জানালেন রূপেশ।