হিলি, 31 অগাস্ট : প্রতি বছরের মতো এবারও দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছে হিলির ধলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উচ্চা গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দারা । বেশি বাজেটের পুজোর মতো জাঁকজমক না থাকলেও এই পুজো ঘিরে মেতে ওঠে দুই বাংলার মানুষ । ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই পুজোয় সমানভাবে অংশ নেন বাংলাদেশের দক্ষিণ দামোদরপুর গ্রামের বাসিন্দারাও ।
বাংলাদেশ লাগোয়া উচ্চা গোবিন্দপুর সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির এই পুজো এবছর 66 বছরে পড়ছে । স্বাধীনতার পর থেকে বছরের পর বছর ধরে দু’দেশের সীমান্তে হিন্দু ও মুসলিমরা একসঙ্গে এই পুজো করে আসছে । 1953 সাল থেকে হয়ে আসছে এই পুজো । আগে জ়িরো পয়েন্টে অস্থায়ী মন্দির তৈরি করে সেখানে পুজো হত ৷ যদিও পরে জ়িরো পয়েন্ট থেকে প্রায় 20 মিটার ভারতীয় ভূখণ্ডে সরিয়ে এনে শুরু হয় পুজো । সেই থেকে এলাকার বাসিন্দারা চাঁদা তুলে এই পুজো চালিয়ে আসছেন । বছরের বাকি দিনগুলোতে BSF কড়া নজরদারির চালালেও পুজোর কটা দিন শিথিল করা হয় সেই নিয়ম । পুজোর সময় মণ্ডপ প্রাঙ্গণে স্থানীয় শিল্পীরা নাটক, কীর্তন ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন ৷
নবমীর দিন যুগিপর্ব গান পরিবেশিত হয় । এই পুজোকে কেন্দ্র করে গোবিন্দপুরে বসে বিশাল মেলা । পুজো ও মেলা দেখতে বাংলাদেশ থেকে অনেকেই আসেন উচ্চা গোবিন্দপুরে ।
পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য তথা প্রাক্তন সম্পাদক নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল জানান, পুজোর জন্য জেলা পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে তিন দফায় বৈঠক হয়েছে । বৈঠক হয়েছে BSF -এর সঙ্গেও । এবার কোরোনার জন্য বড় করে হয়তো পুজো হবে না। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যতটুকু করা যায় তাঁরা করবেন ।
উচ্চা গোবিন্দপুর সংলগ্ন বাংলাদেশের দামোদরপুরের বাসিন্দা মহম্মদ আলি জানান, ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য তাদের মাঝে সীমানা রয়েছে । তবে তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই । দু'দেশের বাসিন্দারা এখানে এক সঙ্গে সব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন । বিশেষ করে দুর্গাপুজোর সময় তাঁরা অন্য জায়গায় গেলেও উচ্চা গোবিন্দপুরেই বেশিরভাগ সময় থাকেন । এখানে সকলে মিলে আনন্দে মেতে ওঠেন । তাঁরাও পুজোর জোগাড় থেকে শুরু করে সব কিছুতে অংশ নেন । হিন্দু ভাইরাও আমাদের সবরকম উৎসবে অংশ নেন । তাঁরা এই পুজোর জন্য বছরভর মুখিয়ে থাকেন । এবিষয়ে উচ্চা গোবিন্দপুরের আর এক বাসিন্দা তন্ময় কুমার মণ্ডল বলেন, পুজোর সব বায়না মোটামুটি হয়ে গেছে । তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা মেনেই পুজো করা হবে । কারণ এবার কোরোনার জন্য বড় করে পুজো করা যাবে না । সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো করবেন তাঁরা । পুজোর দিনগুলোতে বাইরে ঠাকুর দেখতে গেলেও গ্রামের বাসিন্দারা বেশি আনন্দ করেন গ্রামের পুজোতেই ।