বালুরঘাট, 25 এপ্রিল : ভারতে অসুস্থ দাদার চিকিৎসা করাতে এসে 82 হাজার টাকা খুইয়েছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা মোসাম্মদ ফারহানা (31) । তাঁর টাকা ছিনতাই করেছিল এক টোটোচালক। পুলিশের তৎপরতায় মাত্র 24 ঘণ্টার মধ্যে খোয়া যাওয়া টাকা ফিরে পেলেন মোসাম্মদ। পাসপোর্ট, মোবাইলও ফিরে পেয়েছেন তিনি। ঘটনায় অভিযুক্ত টোটো চালক রবি দাসকে (22) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । ছিনতাইয়ের অভিযোগে আরও একজনকে হিলি থেকে আটক করে পুলিশ । পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত প্রদীপকে আজ বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হবে ।
বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার মুদিপাড়ার বাসিন্দা মোসাম্মদ ফারহানা । অসুস্থ দাদা সাহাজাদ হোসেনের (51) চিকিৎসার জন্য গত সোমবার হিলি আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে আসেন । চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের । সেদিন রাতে বালুরঘাট-হাওড়া ট্রেন ধরে কলকাতায় আসবেন বলে ঠিক করেছিলেন। কিন্তু তৃতীয় দফায় নির্বাচনের জন্য সেদিন হিলি-বালুরঘাট রুটে বাস ছিল না । অগত্যা ফারহানা স্টেশনে যাওয়ার জন্য তাঁর অসুস্থ দাদাকে নিয়ে একটি টোটোতে ওঠেন । হিলি থেকে বালুরঘাট যাওয়ার জন্য 100 টাকা ভাড়া ঠিক হয় । এদিকে বালুরঘাট আসার পর ওই টোটো চালক জানায়, তার বাড়ি স্টেশনের দিকে । সেখানেই তাদের নামিয়ে দেবে । কিন্তু ওই মোসাম্মদ টোটো চালককে স্টেশন অবধি যাওয়ার জন্য বলেন । অভিযোগ, স্টেশনে না নিয়ে গিয়ে টোটো নিয়ে চালক কালিকাপুর এলাকায় নিয়ে যায় । যা স্টেশন থেকে অনেকটা দূরে । সেখানে ফাঁকা জায়গায় টোটোটি দাঁড় করিয়ে ভয় দেখিয়ে নগদ 82 হাজার টাকা,পাসপোর্ট,মোবাইল ও সঙ্গে থাকা ব্যাগ নিয়ে চম্পট দেয় ।
স্থানীয় বাসিন্দারা ওই দুই বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে এলাকায় টোটো চালকের সন্ধান করে । তবে খোঁজ না পাওয়ায় তারা বালুরঘাট থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন । থানার IC-র নির্দেশে তদন্তে নামেন ASI দেবাশিস আচার্য । তদন্তে নেমে শহরের CCTV ফুটেজ সহ বিভিন্ন সুত্র ধরে অভিযুক্ত টোটো চালকের পরিচয় জানতে সক্ষম হয় পুলিশ । ঘটনার 24 ঘণ্টার মধ্যে ছিনতাইবাজ টোটো চালককে গ্রেপ্তার করে । অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শিলিগুড়ি সেতুর নিচ থেকে ব্যাগ সহ সমস্ত জিনিসপত্র উদ্ধার করে পুলিশ ।
এবিষয়ে মোসাম্মদ বলেন, "দাদার চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেছিলাম । টোটো করে হিলি থেকে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলাম । সেই সময় ওই টোটো চালক রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে অন্য এক বাইক চালকের সাথে কথা বলে । এরপর সুযোগ বুঝে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ভয় দেখিয়ে সব কিছু কেড়ে নেয় । ঘটনাস্থানে কয়েকজন থাকলেও তারা সাহায্য করেনি । আজ পুলিশের সহযোগিতায় সব কিছু ফিরে পেয়েছি ।"
এবিষয়ে DSP (হেড কোয়ার্টার) ধীমান মিত্র বলেন, "গতকাল গাড়ি না পেয়ে ওই মহিলা টোটো করেন । স্টেশনে না নিয়ে গিয়ে টোটো চালক তাদের নির্জনে নিয়ে গিয়ে সব কিছু কেড়ে নেয় । তারা পুলিশে অভিযোগ করলে ভোটের ব্যস্ততার মধ্যেও ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয় । এবং ঘটনার 24 ঘন্টার মধ্যেই টোটো চালককে গ্রেপ্তার করা হয় ও নগদ টাকা সহ সব কিছু উদ্ধার হয় ।"