বালুরঘাট, 6 নভেম্বর: শতাব্দী প্রাচীন বোল্লা রক্ষা কালীপুজো (Bolla Raksha Kali Puja) ৷ পশু প্রেমীদের দাবিকে সম্মান ও সমর্থন জানিয়ে এ বারে ছাগল বলি প্রথা বন্ধ করল পুজো কমিটি (No more Goat sacrifice) ।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তথা উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী বোল্লা রক্ষা কালীপুজো রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় । এই পুজোকে ঘিরে চারদিন ধরে বোল্লা মায়ের মন্দির এলাকায় বিরাট মেলা বসে । পুজোর দিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা আসে এখানে ৷ তাদের আসার জন্য সারারাত গাড়ি চলাচল করে ।
যেমন এখানে অগণিত ভক্তের সমাগম হয় ৷ তেমনই প্রচুর মানুষ মায়ের কাছে ছাগল বলি দেওয়ার মানদ করেন । সেই মানদ পূরণ করার জন্য পশুবলি দিতে আসেন তারা ৷ আর তা দেওয়ায় জন্য কালীপুজোর দিন সকাল থেকেই মন্দির কমিটির কাছে ভিড় জমে সিরিয়াল নম্বর জোগাড়ের জন্য । এত জনস্রোত সামলাতে পুলিশ প্রশাসনকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় ।
প্রত্যেক বছর প্রায় হাজারের উপর পশুবলি হয় বোল্লা রক্ষা কালীপুজোয় । শুধু ছাগল বলি নয়, সঙ্গে মহিষ পর্যন্ত বলি হয়ে থাকে এই পুজোর দিন । যা নিয়ে প্রত্যেক বছর জেলার পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা প্রতিবাদ জানিয়ে থাকেন ৷ তারা এই বলি প্রথা বন্ধের আবেদন করে পুজো উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কাছে ৷ কিন্তু এর আগে এ নিয়ে কারও কোনও হেলদোল ছিল না । বিগত দু'বছর করোনার অতিমারির কারণে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় মেলা বসেনি । কিন্তু শুধুমাত্র মন্দির কমিটির দ্বারা পুজো অনুষ্ঠিত হয় । তাতে কেবল পুজো কমিটির তরফে পশু বলি হয় ৷ তাছাড়া আর তেমন বলি হয়নি ।
শনিবার মন্দির কমিটির সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক হয় ৷ পশুপ্রেমীদের দাবিকে সম্মান জানিয়ে পশু বলি বন্ধ রাখা হোক । কমিটির সদস্যদের কাছে এবার প্রশাসনের তরফে এ ব্যাপারে অনুরোধ জানানো হয় ৷ পশুপ্রেমীদের দাবিকে সম্মান জানিয়ে ও প্রশাসনের নির্দেশ মেনে পুজো কমিটি তাই সিদ্ধান্ত নেয়, শুধুমাত্র পুজোর নিয়ম রক্ষার জন্য কমিটি দ্বারা কয়েকটি বলি মায়ের সামনে দেওয়া হবে । বাকি যেসব ভক্তরা তাদের মানদ করা পশু নিয়ে আসবেন, তাদের শুধুমাত্র মন্ত্র পরে উৎসর্গ করে দিয়ে বলি না-দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে ।
আরও পড়ুন: মা মাটিয়া কালী থাকেন মাটিতে, তাই জমিদারও শয়ন করতেন মাটিতেই !
জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ জানান, বলি নিয়ে বোল্লা পুজো কমিটি যা করবেন সেটাই হবে । আর এই বিষয়টি জানাজানি হতেই একদিকে পশুপ্রেমীরা যেমন খুশি, তেমনই বিমর্ষ ভক্তজনরা । এখন দেখার পুজোর দিন ভক্তরা কী করে ৷ অন্যদিকে প্রশাসন ও মন্দির কমিটি কীভাবে বিষয়টি সামাল দেয় ।