হরিরামপুর , 19 এপ্রিল : হাতে আর বাকি মাত্র আট দিন ৷ তারপরেই সপ্তম দফায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ভোট ৷ তার আগেই এই জেলার হরিরামপুর বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায়ের বিতর্কিত মন্তব্যে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির ৷
রবিবার হরিরামপুর বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন স্থানে হরিরামপুর বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায়ের সমর্থনে প্রচারে আসেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী । সভায় উপস্থিত ছিলেন হরিরামপুরের বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায়, বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, জেলা বিজেপি সভাপতি বিনয় বর্মন, হরিরামপুরের বিজেপি নেতা শুভাশিস পাল সহ অন্যান্যরা।
সভায় বক্তৃতা রাখার সময় হরিরামপুরের বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায় বিতর্কিত মন্তব্য করেন । ভোটের আগে কোনও সিভিক ভলেন্টিয়ার গ্রামে গিয়ে ভয় দেখালে তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার নিদান দেন তিনি। রাত্রি দু’টো হোক বা যেকোনও সময় গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখতে বললেন সিভিক ভলেন্টিয়ারদের। তারপর তাঁকে ফোন করলে তিনি বিজেপির প্রার্থী হিসেবে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন বলে এদিনের সভা থেকে জানান নীলাঞ্জন ।
এছাড়াও তিনি বলেন, "খেলা হবে ৷ হরিরামপুরের প্রতিটি বুথে বুথে খেলা হবে, বদলা নেওয়া হবে 2019 এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের।" বিজেপি প্রার্থীর এই প্রকাশ্য হুমকিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলায় ৷
নীলাঞ্জনবাবুর কথায় , "বিধানসভা নির্বাচনে হরিরামপুর বিধানসভার যতগুলি ভোটকেন্দ্র আছে সেখানে তৃণমূলীরা এজেন্ট দিতে পারবে না ৷ কারণ ততদিনে তৃণমূল ধরাশায়ী হয়ে যাবে । তৃণমূল সরকার বর্তমানে সিভিকদের দিয়ে সাধারণ মানুষদের ভয় দেখাচ্ছে ৷’’ তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূল দল খুব শীঘ্রই ফটো ফ্রেমে পরিণত হবে আর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না।"
আরও পড়ুন : কলকাতায় প্রচারে না মমতার, জেলার কর্মসূচিতেও কাটছাঁট ; টুইট ডেরেকের
এদিনের সভায় তৃণমূল সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছেড়ে প্রায় শতাধিক কর্মী বিজেপিতে যোগদান করেন। যোগদানের পরই তৃণমূল সুপ্রিমোকে একাধিক ভাষায় কটাক্ষ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "তৃণমূল দলটা বর্তমানে চোরেদের দলে পরিণত হয়েছে এবং আগামীতে এই দল তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়বে ৷ বিধানসভা নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে তত এই দল থেকে প্রচুর তৃণমূল সমর্থক বেরিয়ে এসে বিজেপির পতাকায় নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করবে ৷"
এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, "আমি ততদিন ওই দলে ছিলাম যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিদি ছিলেন ৷ কিন্তু যেদিন তিনি দিদি থেকে পিসি হয়ে গেছেন সেদিন আমি দল থেকে বেরিয়ে এসেছি ।"
এদিন সভামঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন শুভেন্দু অধিকারী , শুভাশিস পাল , নীলাঞ্জনা রায় ও সুকান্ত মজুমদার প্রমুখ ।
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হরিরামপুর ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মনোজিৎ দাস বলেন, "বিজেপির পায়ের তলায় মাটি নেই ৷ তাই তারা ভয় পেয়ে ভুলভাল কথা বলছে ৷ কারণ জনগণের রায় নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে এবং জনগণের রায়ে তা বহাল থাকবে ৷ কে নির্বাচনী এজেন্ট দিতে পারবে কি পারবে না সেটা ভোটের দিনই দেখা যাবে । তৃণমূলের প্রচার দেখে বিজেপি ভয় পেয়েছে তাই এই ভুলভাল কথা বলে সাধারণ মানুষদের বিব্রত করছে । বিজেপির প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর আগামী 2 মে পেয়ে যাবে ।"