দক্ষিণ 24 পরগনা, 23 নভেম্বর: বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পাওয়া যায় পানিফল ৷ কলকাতা ও দক্ষিণ 24 পরগনার পানিফলের বাজারের বেশিরভাগ অংশই নির্ভরশীল স্থানীয় হোগলা গ্রামের কৃষকদের উপর। হোগলা গ্রামে গেলে দেখা যাবে বিঘার পর বিঘা জমি জুড়ে চাষ হচ্ছে পানিফলের। কিন্তু লাভ না-পেয়ে এই পানিফল চাষ থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন কৃষকরা (Water Chestnut Farmer Suffer Losses)। বাজারে পানিফলের মূল্য 50 থেকে 60 টাকা কেজি হলেও কৃষকরা কেজি প্রতি দাম পাচ্ছেন মাত্র 10-20 টাকা ৷ তাই পানিফল চাষ থেকে মুখ ফিরিয়েছন অধিকাংশ কৃষক ৷
এই প্রসঙ্গেই স্থানীয় কৃষক সুলেমান মোল্লা বলেন, ‘‘আশ্বিন মাস থেকে পানিফল চাষ শুরু হয় ৷ প্রথমে বীজ তৈরি করা তারপর সেই চারা গাছগুলিকে জলা জমিতে রোপণ করা। গাছ পরিচর্যা করতে গিয়ে কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা হয় ৷ এই চাষ করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা জলে কাটাতে হয় আমাদের। দীর্ঘসময় জলে থাকার ফলে জলবাহিত রোগের সংক্রমণ হয় ৷ জলে থাকা বিষাক্ত পোকামাকড় কামড়ের ঝুঁকিও থাকে । এই বাধাকে উপেক্ষা করেও সংসারের হাল ধরতে বংশ পরম্পরায় পানিফল চাষের সঙ্গে যুক্ত আমরা।‘‘
আরও পড়ুন: মিড-ডে মিলে শাক-সবজি দিতে স্কুলে চাষাবাদ শুরুর উদ্যোগ জেলাপ্রশাসনের
পর্যাপ্ত দাম না-পেয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রম বৃথা হয়ে যাচ্ছে কৃষকদের। প্রতিদিন জলের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিফল গাছগুলিকে পরিচর্যা থেকে শুরু করে পানিফল সংগ্রহ করতে গিয়ে মারাত্মক জলবাহিত রোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষকদের। পরিশ্রম অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাচ্ছে না কৃষকরা ৷ চাষিদের অভিযোগ, বর্তমানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের দাপটে পানিফলের সঠিক বাজার মূল্য পাচ্ছে না কৃষকরা। তাই বহু কৃষক এই পানি ফল চাষ বন্ধ করে দিয়ছেন। বাধ্য হয়েই সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে চাষিরা ৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র ভরসা, যদি তিনি পানিফল চাষের প্রতি মুখ তুলে তাকায় তাহলে আবারও দক্ষিণ 24 পরগনার হোগলার পানিফল চাষ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।