কাকদ্বীপ, 11 নভেম্বর : একের পর এক দুর্যোগের জেরে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকা ৷ স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে পড়ছে মিষ্টি জলের পুকুর, খাল, বিলে ৷ যার জেরে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চিংড়ির চাষ ৷ এই পরিস্থিতিতে মৎস্য চাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কাকদ্বীপ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা ৷ কীভাবে অল্প খরচে ভেনামি চিংড়ির খাবার তৈরি করে ফলন বাড়ানো যায়, চাষিদের সেই পাঠই দিচ্ছেন তাঁরা ৷ বৃহস্পতিবার এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই একটি প্রশিক্ষণ শিবির ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়ে ৷ কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমার প্রায় দু’শো চিংড়ি চাষি এই কর্মশালায় যোগ দেন ৷ উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাও ৷
আরও পড়ুন : Cultivation in Sundarban : জলে ভাসমান ভেলাতেই হবে চাষ, সুন্দরবনে দিশা দেখাচ্ছে এক সংস্থা
গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বিজ্ঞানী দেবাশিস দে বলেন, ‘‘ইয়াস-সহ একাধিক ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে উপকূলবর্তী এলাকাগুলি ৷ সুন্দরবনের চিংড়ি চাষিদের ক্ষতির কথা মাথায় রেখেই সর্ষের খোল দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে ভেনামি চিংড়ির খাবার তৈরি করেছি আমরা ৷ আগামী দিনে ভেনামি চিংড়ি চাষ করলে এই খাবার খুব কম দামেই কিনতে পারবেন মৎস্যজীবীরা ৷ তাঁদের খরচ কমলেও ফলন বাড়বে ৷ ফলে চাষিরা সকলেই লাভের মুখ দেখবেন ৷ এতে সবথেকে বেশি উপকৃত হবেন প্রান্তিক চাষিরা ৷’’
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সুন্দরবনের অধিকাংশ মৎস্য চাষিরই আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৷ কিন্তু, সুন্দরবনের নোনা জলে ভেনামি চিংড়ির চাষ খুবই লাভজনক হতে পারে ৷ তবে তার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ খুবই জরুরি ৷’’ এদিনের কর্মশালায় গবেষক ও বিজ্ঞানীরা মৎস্য চাষিদের সেই প্রশিক্ষণই দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন : onion cultivation : পেঁয়াজ চাষে স্বনির্ভর হওয়ার পথে রাজ্য
প্রশিক্ষণ সভায় যোগ দেওয়া এক চাষি, অপূর্ব আনন্দ দাস বলেন, ‘‘ইয়াসে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে ৷ আমরা আবার নতুন করে পুকুর ও ভেড়িতে চিংড়ি চাষ করতে চাই ৷ চিংড়ির ভাল চাহিদা ও দাম রয়েছে ৷ অথচ, বাজারে নামী সংস্থার তৈরি চিংড়ির যে খাবার পাওয়া যায়, তার দাম অত্যন্ত বেশি ৷ তাই কম খরচ বিকল্প খাবারের সন্ধান পেলে এবং তাতে উৎপাদন বাড়লে আমাদের রোজগার বাড়বে ৷ আজকের প্রশিক্ষণ আমাদের খুবই কাজে লাগবে ৷’’