কলকাতা, 20 এপ্রিল : সেন্সর করেছিল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর। কিন্তু, তাতে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে ফের কর্মিসভায় অংশ নিলেন ভাঙড়ের ভোগালি 2 পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা মোদ্দাসের হোসেন। হুঁশিয়ারিও দিলেন।
কিছুদিন আগে তৃণমূলের কর্মিসভায় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, “পোস্টার, দেওয়াল লেখা তো দূরের কথা, বিরোধীরা কোনও বুথে যেন এজেন্ট বসাতে না পারে ।" তিনি আরও বলেন, "কেউ বলতে পারবে না কোনও কাজের জন্য পঞ্চায়েত থেকে ফিরে এসেছে । লুকিয়ে লুকিয়ে BJP-কে ভোট দেবে, আর বলবে রূপশ্রীতে সই করে দাও । কন্যাশ্রীতে সই করে দাও । তোমায় কি আমি আদর করব ? ওই সব আদরের আর সময় নেই ।"
এরপর ভাঙড়ে কৃষকদের চেক বিলি করার সময় তৃণমূলকে ভোট দিতে নির্দেশ দেন তিনি । প্রধান বলেন, “আমাদের এগারো হাজার ভোটার । প্রত্যেক ভোট যেন আমাদের বাক্সে পড়ে । এই চেক নিয়ে গিয়ে আবার যেন CPI(M)-কে ভোট দিয়ে দেবেন না । আমাদের প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীকেই ভোট দেবেন ।"
এই বক্তব্য নিয়ে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ ওঠে। তারপরই দক্ষিণ 24 পরগনা জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর । সেই রিপোর্ট পেয়ে প্রধান মোদাসের হোসেনকে সেন্সর করে কমিশন । জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্দেশ না মানলে দেওয়া হবে কড়া শাস্তি ।
তাতে থোড়াই কেয়ার। গতকাল ভাঙড় 2 পঞ্চায়েত এলাকায় মিমি চক্রবর্তীর সমর্থনে তৃণমূলের কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছিল । উপস্থিত ছিলেন আরাবুল ইসলাম, পঞ্চায়েত প্রধান মোদ্দাসের হোসেন । সেখানে মোদ্দাসের বলেন, "বৃহস্পতিবার উত্তর বানিয়ালায় মিটিং করেছি। CPI(M) থেকে তৃণমূলে আসা কর্মীরা কথা দিয়েছে যেভাবে বামেদের আমলে জ়িরো ব্যালেন্স করে জিতিয়ে দিত, এবারও তাই করবে । আপনাদেরও তাই করতে হবে ।"
আরও বলেন, "এবার লোকসভা ভোট । এই ভোটের গুরুত্ব অনেক বেশি । একটা ভোট যদি এদিক-ওদিক পড়ে, তাহলে কিন্তু ক্ষতি হবে । আমরা কৃষকদের টাকা দিচ্ছি, পড়াশোনা, রাস্তাঘাটের টাকা দিচ্ছি । বিধবাদের সার্টিফিকেট দিচ্ছি । তাই কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছি যেভাবে বলব করতে হবে । এবার নয় নেভার ।"
তাঁর এই মন্তব্য ধরা পড়ে কমিশনের মিডিয়া ওয়াচে। তারপরই দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা ইলেকশন অফিসারের কাছে রিপোর্ট তলব করে কমিশন। এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু বলেন, “ বিষয়টি নিয়ে আমরা রিপোর্ট চেয়েছি।" রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে নির্বাচন কমিশন।