ETV Bharat / state

Dholahat Murder Case: সুপারি নিয়ে প্রেমিক সেজে বধূকে খুনের অভিযোগ, ঢোলাহাটে স্বামী-সহ গ্রেফতার হত্যায় অভিযুক্ত

দক্ষিণ 24 পরগনার ঢোলাহাট থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে ৷ একজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ রয়েছে ৷ দ্বিতীয় জন গ্রেফতার হয়েছেন খুনের সুপারি দিয়ে ৷ যিনি সুপারি দিয়েছিলেন, তিনি আবার নিহত মহিলার স্বামী ৷

Dholahat Murder Case
Dholahat Murder Case
author img

By

Published : Apr 24, 2023, 6:41 PM IST

সুপারি নিয়ে প্রেমিক সেজে বধূকে খুনের অভিযোগে ঢোলাহাটে স্বামী-সহ গ্রেফতার হত্যায় অভিযুক্ত

ঢোলাহাট (দক্ষিণ 24 পরগনা), 24 এপ্রিল: দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ‘সুখের সংসারে’ বাধা হয়ে উঠছিলেন প্রথম পক্ষ ৷ সেই কারণেই ‘পথের কাঁটা’ চিরতরে সাফ করার পরিকল্পনা করেন নাসিরউদ্দিন শাহ ৷ নিজেকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে রাখতে ছক কষেছিলেন ‘নিখুঁত’ ভাবে ৷ সেই ছক মোতাবেক আতিয়ার শেখ নামে এক যুবক নাসিরুদ্দিনের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন ৷ তার পর সুযোগ বুঝে খুন করেন সাহেবা বিবি নামে ওই মহিলাকে ৷

নাহ ! এটা কোনও থ্রিলার সিনেমার প্লট নয় ৷ বরং পুলিশের দাবি, বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে ৷ এই ঘটনায় সুপারি কিলার হিসেবে অভিযুক্ত আতিয়ার শেখ ও সাহেবার স্বামী নাসিরুদ্দিন, দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ 24 পরগনার ঢোলাহাট থানার পুলিশ ৷ তবে পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে বছর পাঁচেকের সেলিম ৷ সে নাসিরুদ্দিন ও সাহেবার ছেলে ৷ তার সামনেই আতিয়ার তার মাকে খুন করেন বলে অভিযোগ ৷ সেই ঘটনা সে প্রথমে পুলিশকে জানায় ৷ যে কারণে আতিয়ারকে গ্রেফতার করতে পুলিশের বেশি সময় লাগেনি ৷ আর আতিয়ারকে জেরা করেই নাসিরুদ্দিনকে ধরে পুলিশ ৷

পুলিশ জানিয়েছে, 10 বছর আগে দক্ষিণ 24 পরগনার সাগরের খানসামাবাদের বাসিন্দা সাহেবা বিবির সঙ্গে নামখানা ব্লকের বালিয়াড়া গ্রামের নাসিরউদ্দিন শাহের বিয়ে হয় । পরে তাঁরা নামখানার পাতিবুনিয়াতে থাকতে শুরু করেন । দম্পতির এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে । নাসিরউদ্দিন কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে চলে যান । পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন নাসিরউদ্দিন । এরপর থেকেই প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় তাঁর ৷

পুলিশের দাবি, সেই বিবাদে ইতি টানতেই তিনি সাহেবাকে খুনের ছক কষেন ৷ যোগাযোগ করেন নিকট আত্মীয় আতিয়ার শেখের সঙ্গে । আতিয়ারকে সাহেবার খুনের সুপারি দেন নাসিরুদ্দিন । কীভাবে কাজ করতে হবে, সেটাই বুঝিয়ে দেন ৷ সেই ছক মেনে প্রথমে আতিয়ার ধীরে ধীরে সাহেবা বিবির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন । তারপর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করেন । কয়েকবার সাহেবাকে নিয়ে হোটেলেও গিয়েছিলেন আতিয়ার ।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি থেকে দফায় দফায় আতিয়ারকে 50 হাজার টাকা খুনের সুপারি বাবদ দিয়ে দেন নাসিরুদ্দিন ৷ তার পর গত 11 এপ্রিল সকালে পাতিবুনিয়ার বাড়ি থেকে পাঁচ বছরের ছেলে সেলিমকে নিয়ে বেরিয়ে ছিলেন সাহেবা । সাগরে বাপের বাড়ি ঘুরে ছেলেকে নিয়ে বিকেলে চলে আসেন মন্দিরবাজারের লক্ষ্মীকান্তপুরে । সেখানে প্রেমিক আতিয়ারের সঙ্গে দেখা করেন সাহেবা । তাঁরা একটি স্থানীয় হোটেলে খাওয়া দাওয়া করেন ।

পুলিশের দাবি, ওইদিন রাতে লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে বাস ধরে ঢোলাহাটের শিমুলবেড়িয়ায় আসেন তিনজনে । অভিযোগ, সেখানে পাওয়ার হাউসের পিছনের দিকে খালের কাছে সাহেবাকে টেনে নিয়ে যায় আতিয়ার । তারপর গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে খালের জলকাদায় সাহেবার মুখ চেপে ধরেন আতিয়ার । অল্পক্ষণের মধ্যে শ্বাস রোধ হয়ে মৃত্যু হয় সাহেবার ।

পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ বছরের সেলিম সব দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায় ৷ তাঁকে স্থানীয় কয়েকজন উদ্ধার করেন ৷ খবর দেওয়া হয় পুলিশে ৷ পুলিশের কাছে বিষয়টি জানায় সেলিম ৷ তার পর উদ্ধার হয় সাহেবার দেহ ৷ গ্রেফতার করা হয় আতিয়ারকে ৷ তাঁকে জেরা করে নাসিরুদ্দিনের খোঁজ মেলে ৷ বেঙ্গালুরুর হোটেল থেকে সম্প্রতি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ আপাতত দু’জনেই পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন ৷ মন্দিরবাজারের ডিএসপি বিশ্বজিৎ নস্কর জানান, দু’জনকে এবার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ।

আরও পড়ুন: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ, স্বামীর হাতে খুন স্ত্রী !

সুপারি নিয়ে প্রেমিক সেজে বধূকে খুনের অভিযোগে ঢোলাহাটে স্বামী-সহ গ্রেফতার হত্যায় অভিযুক্ত

ঢোলাহাট (দক্ষিণ 24 পরগনা), 24 এপ্রিল: দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ‘সুখের সংসারে’ বাধা হয়ে উঠছিলেন প্রথম পক্ষ ৷ সেই কারণেই ‘পথের কাঁটা’ চিরতরে সাফ করার পরিকল্পনা করেন নাসিরউদ্দিন শাহ ৷ নিজেকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে রাখতে ছক কষেছিলেন ‘নিখুঁত’ ভাবে ৷ সেই ছক মোতাবেক আতিয়ার শেখ নামে এক যুবক নাসিরুদ্দিনের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন ৷ তার পর সুযোগ বুঝে খুন করেন সাহেবা বিবি নামে ওই মহিলাকে ৷

নাহ ! এটা কোনও থ্রিলার সিনেমার প্লট নয় ৷ বরং পুলিশের দাবি, বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে ৷ এই ঘটনায় সুপারি কিলার হিসেবে অভিযুক্ত আতিয়ার শেখ ও সাহেবার স্বামী নাসিরুদ্দিন, দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ 24 পরগনার ঢোলাহাট থানার পুলিশ ৷ তবে পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে বছর পাঁচেকের সেলিম ৷ সে নাসিরুদ্দিন ও সাহেবার ছেলে ৷ তার সামনেই আতিয়ার তার মাকে খুন করেন বলে অভিযোগ ৷ সেই ঘটনা সে প্রথমে পুলিশকে জানায় ৷ যে কারণে আতিয়ারকে গ্রেফতার করতে পুলিশের বেশি সময় লাগেনি ৷ আর আতিয়ারকে জেরা করেই নাসিরুদ্দিনকে ধরে পুলিশ ৷

পুলিশ জানিয়েছে, 10 বছর আগে দক্ষিণ 24 পরগনার সাগরের খানসামাবাদের বাসিন্দা সাহেবা বিবির সঙ্গে নামখানা ব্লকের বালিয়াড়া গ্রামের নাসিরউদ্দিন শাহের বিয়ে হয় । পরে তাঁরা নামখানার পাতিবুনিয়াতে থাকতে শুরু করেন । দম্পতির এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে । নাসিরউদ্দিন কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে চলে যান । পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন নাসিরউদ্দিন । এরপর থেকেই প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় তাঁর ৷

পুলিশের দাবি, সেই বিবাদে ইতি টানতেই তিনি সাহেবাকে খুনের ছক কষেন ৷ যোগাযোগ করেন নিকট আত্মীয় আতিয়ার শেখের সঙ্গে । আতিয়ারকে সাহেবার খুনের সুপারি দেন নাসিরুদ্দিন । কীভাবে কাজ করতে হবে, সেটাই বুঝিয়ে দেন ৷ সেই ছক মেনে প্রথমে আতিয়ার ধীরে ধীরে সাহেবা বিবির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন । তারপর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করেন । কয়েকবার সাহেবাকে নিয়ে হোটেলেও গিয়েছিলেন আতিয়ার ।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি থেকে দফায় দফায় আতিয়ারকে 50 হাজার টাকা খুনের সুপারি বাবদ দিয়ে দেন নাসিরুদ্দিন ৷ তার পর গত 11 এপ্রিল সকালে পাতিবুনিয়ার বাড়ি থেকে পাঁচ বছরের ছেলে সেলিমকে নিয়ে বেরিয়ে ছিলেন সাহেবা । সাগরে বাপের বাড়ি ঘুরে ছেলেকে নিয়ে বিকেলে চলে আসেন মন্দিরবাজারের লক্ষ্মীকান্তপুরে । সেখানে প্রেমিক আতিয়ারের সঙ্গে দেখা করেন সাহেবা । তাঁরা একটি স্থানীয় হোটেলে খাওয়া দাওয়া করেন ।

পুলিশের দাবি, ওইদিন রাতে লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে বাস ধরে ঢোলাহাটের শিমুলবেড়িয়ায় আসেন তিনজনে । অভিযোগ, সেখানে পাওয়ার হাউসের পিছনের দিকে খালের কাছে সাহেবাকে টেনে নিয়ে যায় আতিয়ার । তারপর গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে খালের জলকাদায় সাহেবার মুখ চেপে ধরেন আতিয়ার । অল্পক্ষণের মধ্যে শ্বাস রোধ হয়ে মৃত্যু হয় সাহেবার ।

পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ বছরের সেলিম সব দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায় ৷ তাঁকে স্থানীয় কয়েকজন উদ্ধার করেন ৷ খবর দেওয়া হয় পুলিশে ৷ পুলিশের কাছে বিষয়টি জানায় সেলিম ৷ তার পর উদ্ধার হয় সাহেবার দেহ ৷ গ্রেফতার করা হয় আতিয়ারকে ৷ তাঁকে জেরা করে নাসিরুদ্দিনের খোঁজ মেলে ৷ বেঙ্গালুরুর হোটেল থেকে সম্প্রতি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ আপাতত দু’জনেই পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন ৷ মন্দিরবাজারের ডিএসপি বিশ্বজিৎ নস্কর জানান, দু’জনকে এবার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ।

আরও পড়ুন: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ, স্বামীর হাতে খুন স্ত্রী !

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.