মথুরাপুর, 28 অক্টোবর: দুর্গাপুজো শেষ হলেও বাংলায় এখনও বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ ৷ আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো ৷ প্রত্যেকটা বাঙালির ঘরে ঘরে মেয়েরূপে পূজিত হচ্ছেন মা লক্ষ্মী ৷ তবে এখন দুর্গাপুজোর পাশাপাশি লক্ষ্মীপুজোও হয়েছে বারোয়ারি ৷ বিভিন্ন জেলায় লক্ষ্মীপুজোয় দেখা যাচ্ছে থিমের বাহার ৷ তেমনই নজরকাড়া থিম নিয়ে হাজির মথুরাপুর সদিয়াল জনকল্যাণ সমিতির সহযোগিতায় আমরা সবাই ভাই ভাই সংঘ ৷ 17 বছরে পা দিল তাদের এই পুজো ৷
তবে প্রতি বছরই নজরকাড়া থিম নিয়ে হাজির হয় এই পুজো কমিটি । এবারও তার ব্যতিক্রম হল না । শিলিগুড়ির কামাখ্যা বিশালাক্ষী মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে এই পুজো মণ্ডপ । মা লক্ষ্মীর প্রতিমা তৈরি হয়েছে কয়েক হাজার লঙ্কা দিয়ে । পাশাপাশি হোগলা পাতা ও ফুল দিয়ে নির্মাণ হয়েছে লক্ষ্মণের শক্তিশেল ৷ আর কয়েক হাজার রাখি দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে সীতার বনবাস । প্রতিমার পিছনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনা । আজ এই মণ্ডপের শুভ উদ্বোধন করবে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা ।
কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদিয়াল গ্রামে 300 জনের মতো মানুষের বাস ৷ তার মধ্যে কেউ কেউ মৎস্যজীবী ৷ আবার কেউ কৃষিজীবী ৷ তাঁরা প্রতিবছর পুজো শেষে মূর্তি বিসর্জন পরের দিন থেকে টাকা জমাতে থাকেন ৷ পরবর্তী বছরের পুজোর জন্য টাকা জমিয়ে তুলে দেওয়া হয় পুজো কমিটির হাতে ৷ এই এলাকায় হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষের বাস ৷ সকলেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাতেন লক্ষ্মীর আরাধনায় । এই পুজোকে কেন্দ্র করে সদিয়াল গামে উৎসবের আবহাওয়া তৈরি হয় । দুর্গাপুজো নয়, গ্রামবাসীরা নতুন জামা কাপড় পড়েন এই লক্ষ্মীপুজোয় ৷ এক সপ্তাহ ধরে চলে পুজোর অনুষ্ঠান । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ-সহ নানান কর্মসূচি করা হয় এই এক সপ্তাহ ধরে ।
আরও পড়ুন: এই গ্রামে কোজাগরী পূর্ণিমায় একসঙ্গে পূজিত হন লক্ষ্মী-সরস্বতী
পুজোর উদ্যোক্তা বাপি হালদার বলেন, "মাস খানেক ধরে আমাদের পুজোর প্রস্তুতি চলে । রামায়ণের লক্ষ্মণকে বাঁচাতে গন্ধমাদন পর্বত নিয়ে এসেছিল হনুমান ৷ সেই চিত্ত যেমন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবার মণ্ডপে ৷ যেমন সীতার বনবাসের ছবিও ফুটে তোলা হয়েছে ।" দক্ষিণ 24 পরগনার বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এই পুজোয় ঘুরতে আসেন হাজারও মানুষ । যেমন রায়দিঘি, কুলতলি, মন্দিরবাজার, পাথরপ্রতিমা, জয়নগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার লোক এখানে ভিড় জমান ।