ETV Bharat / state

Baruipur Murder for Revenge: গার্হস্থ্য হিংসার জেরে বাবার প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা, কীভাবে দেহ কাটা যায় অনলাইনে শেখেন ছেলে

গার্হস্থ্য হিংসার (Domestic Violence) জেরে বাবার প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা থেকে বদলা নেওয়ার উচ্ছে জন্মেছিল বারুইপুরে (Baruipur Murder for Revenge) প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ছেলের ৷ কীভাবে দেহ কাটা যায় অনলাইনে তাও শিখেছিলেন তিনি ৷

hatred-for-father-due-to-domestic-violence-baruipur-boy-learned-hacking-body-online
গার্হস্থ্য হিংসার জেরে বাবার প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা, কীভাবে দেহ কাটা যায় অনলাইনে শেখে ছেলে
author img

By

Published : Nov 21, 2022, 6:09 PM IST

কলকাতা, 21 নভেম্বর: ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স বা গার্হস্থ্য হিংসা (Domestic Violence) যে কতটা ভয়াবহ ভাবে মনে দাগ কাটতে পারে, তার প্ৰকৃষ্ট উদাহরণ বারুইপুরে মল্লিকপুরের নৃশংস হত্যাকাণ্ড (Baruipur Murder for Revenge)। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ছেলে জয় ওরফে রাজু চক্রবর্তী এবং অভিযুক্ত মা শ্যামলী চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বারুইপুর জেলা পুলিশ । কিন্তু বছর 55-র বাবা, প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে হত্যা করার যে ধরন, সেটি কোথা থেকে রপ্ত করলেন অভিযুক্ত মা ও ছেলে ? তদন্তে নেমে বারুইপুর জেলা পুলিশের আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, বছরের পর বছর বাবার বিরুদ্ধে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েই জন্ম নিয়েছিল রিভেঞ্জ বা বদলা নেওয়ার তাগিদ । পুলিশ সূত্রে খবর, বাবাকে খুনের পর দেহের ছয় টুকরো করার জন্য আগে থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ছেলে রাজু চক্রবর্তী ওরফে জয় । আর তাঁর মা শ্যামলী চক্রবর্তী শুধু গোটা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মাত্র ।

তদন্তে প্রাথমিকভাবে এখনও পর্যন্ত তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন যে, খুনের পর কীভাবে এক লহমায় বিন্দুমাত্র বল প্রয়োগ না করে মানবদেহ কীভাবে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করা যায়, তার প্রশিক্ষণ অনলাইনে নিয়েছিলেন অভিযুক্ত জয় । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারুইপুর জেলা পুলিশের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, "ঘটনায় একটি হ্যাকস ব্লেডের কথা আমরা জানতে পেরেছি ৷ কিন্তু গোয়েন্দারা উজ্জ্বল চক্রবর্তীর দেহ দেখে প্রাথমিকভাবে অনুমান করছেন যে, অন্য আধুনিক মানের কোনও যন্ত্র অথবা অপারেশন বা অস্ত্রপচারের জন্য ব্যবহৃত কোনও আধুনিক সূক্ষ্ম যন্ত্র দিয়েই অভিযুক্ত ছেলে তাঁর বাবার দেহ, পা, কোমর এবং বুক কেটে মোট ছ টুকরো করেছেন ।"

বারুইপুর জেলা পুলিশের সুপার স্মিতা পুষ্পা জানিয়েছেন, গত 14 নভেম্বর ছেলে জয়ের সঙ্গে তাঁর বাবা উজ্জ্বল চক্রবর্তীর 3,000 টাকার কলেজ ফি নিয়ে গোলমাল হয় । তবে এই গোলমাল যে প্রথমবার তেমনটা নয় । ধৃত ছেলে ও তাঁর মা শ্যামলীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বছরের পর বছর মদ্যপান করে শ্যামলী চক্রবর্তী এবং তাঁর ছেলে রাজু চক্রবর্তীকে বেধড়ক মারধর করতেন প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তী ।

আরও পড়ুন: প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দেহাংশের খোঁজে ডুবুরি

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন যে, জেরায় জয় কাঁদতে কাঁদতে তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে জানান যে, তিনি যখনই বাড়ি ফিরতেন তখনই তাঁর মাকে হয় বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখতেন, নয়তো ঘরের এক কোণে মাথা হেঁট করে পড়ে থাকতে দেখতেন । মায়ের শরীরে একাধিক জায়গায় নাকি মারধরের চিহ্নও দেখতেন জয় । উজ্জ্বল চক্রবর্তীর প্রতি ধীরে ধীরে ঘৃণা, ক্ষোভ এবং বদলা নেওয়ার একটা ইচ্ছা জন্মায় ছেলের মনের মধ্যে ।

এরপর গত 14 নভেম্বর রাতে গোটা ঘটনাটি ঘটে । জেরায় ছেলে জয় পুলিশকে জানিয়েছেন যে, বাবাকে তিনি মেরে ফেলতে চাননি ৷ কিন্তু বাবাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার পর তিনি তাঁকে এলোপাথাড়ি ভাবে হাত দিয়ে মারতে থাকেন । একটা সময় দেখা যায়, বাবার আর প্রাণ নেই ৷ ঠিক সেই সময় ধারালো অস্ত্র এবং একাধিক উন্নত মানের সূক্ষ্ম ও তীক্ষ্ণ অস্ত্রের মাধ্যমে বাবার দেহ ছয় টুকরো করেন জয় ৷ এরপর দেহাংশগুলি শরীর থেকে আলাদা করেন তিনি ৷ আর এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর মা ৷

এরপরে মা শ্যামলী চক্রবর্তীর সঙ্গে সাইকেলে করে দেহের নিম্নাংশ একটি বস্তায় ভরে মল্লিকপুরের একটি কচুরিপানায় ভরা জলাভূমিতে ফেলে আসেন জয় । পরে অন্যান্য দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলে চুপচাপ গোটা ঘটনাটি চেপে যান তিনি এবং তাঁর মা শ্যামলী ৷ এরপরই দেখা যায় যে, একটি নির্জন এলাকায় বস্তায় মোড়া একটি বস্তুকে ঘিরে রয়েছে একটি সাপ । এলাকার লোকজনের সন্দেহ হওয়াতে সেই বস্তা খুলে দেখা যায় এক ব্যক্তির শরীরের নিম্নাংশ রয়েছে সেই বস্তায় ৷ খবর দেওয়া হয় পুলিশে ৷ এরপরই গোটা ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত মা এবং ছেলেকে প্রথম অবস্থায় আটক এবং পরে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ তাঁদের জেরা করেই গোটা ঘটনার সূত্রপাত এবং কীভাবে বাবা উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে মেরে তাঁর দেহের ছয় টুকরো করে কোথায় কোথায় ফেলা হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য জেনে বিভিন্ন জায়গা থেকে দেহাংশ উদ্ধার করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা ।

কলকাতা, 21 নভেম্বর: ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স বা গার্হস্থ্য হিংসা (Domestic Violence) যে কতটা ভয়াবহ ভাবে মনে দাগ কাটতে পারে, তার প্ৰকৃষ্ট উদাহরণ বারুইপুরে মল্লিকপুরের নৃশংস হত্যাকাণ্ড (Baruipur Murder for Revenge)। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ছেলে জয় ওরফে রাজু চক্রবর্তী এবং অভিযুক্ত মা শ্যামলী চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বারুইপুর জেলা পুলিশ । কিন্তু বছর 55-র বাবা, প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে হত্যা করার যে ধরন, সেটি কোথা থেকে রপ্ত করলেন অভিযুক্ত মা ও ছেলে ? তদন্তে নেমে বারুইপুর জেলা পুলিশের আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, বছরের পর বছর বাবার বিরুদ্ধে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েই জন্ম নিয়েছিল রিভেঞ্জ বা বদলা নেওয়ার তাগিদ । পুলিশ সূত্রে খবর, বাবাকে খুনের পর দেহের ছয় টুকরো করার জন্য আগে থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ছেলে রাজু চক্রবর্তী ওরফে জয় । আর তাঁর মা শ্যামলী চক্রবর্তী শুধু গোটা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মাত্র ।

তদন্তে প্রাথমিকভাবে এখনও পর্যন্ত তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন যে, খুনের পর কীভাবে এক লহমায় বিন্দুমাত্র বল প্রয়োগ না করে মানবদেহ কীভাবে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করা যায়, তার প্রশিক্ষণ অনলাইনে নিয়েছিলেন অভিযুক্ত জয় । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারুইপুর জেলা পুলিশের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, "ঘটনায় একটি হ্যাকস ব্লেডের কথা আমরা জানতে পেরেছি ৷ কিন্তু গোয়েন্দারা উজ্জ্বল চক্রবর্তীর দেহ দেখে প্রাথমিকভাবে অনুমান করছেন যে, অন্য আধুনিক মানের কোনও যন্ত্র অথবা অপারেশন বা অস্ত্রপচারের জন্য ব্যবহৃত কোনও আধুনিক সূক্ষ্ম যন্ত্র দিয়েই অভিযুক্ত ছেলে তাঁর বাবার দেহ, পা, কোমর এবং বুক কেটে মোট ছ টুকরো করেছেন ।"

বারুইপুর জেলা পুলিশের সুপার স্মিতা পুষ্পা জানিয়েছেন, গত 14 নভেম্বর ছেলে জয়ের সঙ্গে তাঁর বাবা উজ্জ্বল চক্রবর্তীর 3,000 টাকার কলেজ ফি নিয়ে গোলমাল হয় । তবে এই গোলমাল যে প্রথমবার তেমনটা নয় । ধৃত ছেলে ও তাঁর মা শ্যামলীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বছরের পর বছর মদ্যপান করে শ্যামলী চক্রবর্তী এবং তাঁর ছেলে রাজু চক্রবর্তীকে বেধড়ক মারধর করতেন প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তী ।

আরও পড়ুন: প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দেহাংশের খোঁজে ডুবুরি

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন যে, জেরায় জয় কাঁদতে কাঁদতে তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে জানান যে, তিনি যখনই বাড়ি ফিরতেন তখনই তাঁর মাকে হয় বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখতেন, নয়তো ঘরের এক কোণে মাথা হেঁট করে পড়ে থাকতে দেখতেন । মায়ের শরীরে একাধিক জায়গায় নাকি মারধরের চিহ্নও দেখতেন জয় । উজ্জ্বল চক্রবর্তীর প্রতি ধীরে ধীরে ঘৃণা, ক্ষোভ এবং বদলা নেওয়ার একটা ইচ্ছা জন্মায় ছেলের মনের মধ্যে ।

এরপর গত 14 নভেম্বর রাতে গোটা ঘটনাটি ঘটে । জেরায় ছেলে জয় পুলিশকে জানিয়েছেন যে, বাবাকে তিনি মেরে ফেলতে চাননি ৷ কিন্তু বাবাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার পর তিনি তাঁকে এলোপাথাড়ি ভাবে হাত দিয়ে মারতে থাকেন । একটা সময় দেখা যায়, বাবার আর প্রাণ নেই ৷ ঠিক সেই সময় ধারালো অস্ত্র এবং একাধিক উন্নত মানের সূক্ষ্ম ও তীক্ষ্ণ অস্ত্রের মাধ্যমে বাবার দেহ ছয় টুকরো করেন জয় ৷ এরপর দেহাংশগুলি শরীর থেকে আলাদা করেন তিনি ৷ আর এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর মা ৷

এরপরে মা শ্যামলী চক্রবর্তীর সঙ্গে সাইকেলে করে দেহের নিম্নাংশ একটি বস্তায় ভরে মল্লিকপুরের একটি কচুরিপানায় ভরা জলাভূমিতে ফেলে আসেন জয় । পরে অন্যান্য দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলে চুপচাপ গোটা ঘটনাটি চেপে যান তিনি এবং তাঁর মা শ্যামলী ৷ এরপরই দেখা যায় যে, একটি নির্জন এলাকায় বস্তায় মোড়া একটি বস্তুকে ঘিরে রয়েছে একটি সাপ । এলাকার লোকজনের সন্দেহ হওয়াতে সেই বস্তা খুলে দেখা যায় এক ব্যক্তির শরীরের নিম্নাংশ রয়েছে সেই বস্তায় ৷ খবর দেওয়া হয় পুলিশে ৷ এরপরই গোটা ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত মা এবং ছেলেকে প্রথম অবস্থায় আটক এবং পরে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ তাঁদের জেরা করেই গোটা ঘটনার সূত্রপাত এবং কীভাবে বাবা উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে মেরে তাঁর দেহের ছয় টুকরো করে কোথায় কোথায় ফেলা হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য জেনে বিভিন্ন জায়গা থেকে দেহাংশ উদ্ধার করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.