গঙ্গাসাগর, 13 জানুয়ারি : সংক্রান্তির বাকি 2 দিন । গঙ্গাসাগরে ভিড় বাড়ছে পুণ্যার্থীদের । এখনও পর্যন্ত 11 লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে । সবরকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি প্রশাসন । গতকাল পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পুরো বিষয়টি বিশ্লেষণ করেন । বলেন, ''অন্য বছরের মতো এবারও আমরা ব্যবস্থার কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি । আমরা ইতিমধ্যেই প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি । ওঁরা জানিয়েছেন, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যা যা কাজ হওয়া দরকার, তা হয়েছে । নতুন বেশ কিছু বিষয় এবার গঙ্গাসাগরে আনা হয়েছে । আশা করছি এবারও যে সকল পুণ্যার্থী আসবেন, তাদের কোনও অসুবিধা হবে না । আমরা যথেচ্ছ আয়োজন করার চেষ্টা করব ।''
কোনওরকম বিপর্যয়ই কাম্য নয়, তবে প্রয়োজনে তৈরি রয়েছে দমকল । বিষয়টি জানিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, ''মেলার প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও মন্ত্রী এখানে থাকবেন । আজ আমি, সুজিত ও গিয়াসউদ্দিন আছি । বাকি, ফিরহাদ, অরূপও থাকবে । এখানকার বিধায়ক বঙ্কিম হাজরাও রয়েছেন । গঙ্গাসাগরের পরিস্থিতি মুখ্যমন্ত্রী নিজে দেখে গেছেন । পরামর্শ দিয়ে গেছেন । ব্যবস্থপনায় কোনও খামতি প্রশাসন রাখেনি । ''
গতকালই গঙ্গাসাগরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন দু'জন পুণ্যার্থী । তাঁদের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসাপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । যা গঙ্গাসাগরের ক্ষেত্রে এই প্রথম । এবিষয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, দু'জন অসুস্থ হয়েছেন এখানে এসে । অনিমা দাস (57), অসমের বাসিন্দা । অপর জন হাওড়ার বাসিন্দা বিকাশ বেজ । এই দু'জনকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে । ঘটনাটি উল্লেখ করলাম কারণ এই মেলা হচ্ছে বহু যুগ ধরে । তবে, এত তাড়াতাড়ি কোনওদিন আমরা অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে পারিনি । এবার সেটা হয়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে ।
দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও তাঁর টিম তৈরি বিপর্যয় মোকাবিলায় । সুজিতকে পাশে নিয়েই গতকাল সুব্রত জানালেন, যেহেতু শীতকাল, তাপমাত্রার জন্য অনেকেই তাঁবুর বাইরে আগুন পোহাতে চান । যা থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা থেকে যায় । ফলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দমকল থাকবে । কচুবেড়িয়ায় সুজিত নিজে উপস্থিত থাকবেন ।
ইতিমধ্যেই 11 লাখ লোক চলে এসেছে সাগর পারে । আয়োজন প্রস্তুত । সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানালেন, পুণ্যার্থী সংখ্যা গতবারের তুলনায় এবার অনেকটাই বেশি । তাঁদের জন্য 1500 বাথরুম সেট তৈরি করা হয়েছে । 1 লাখ পুণ্যার্থীর থাকার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন । রয়েছে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট । 300 বেডের হাসপাতাল ও 1 হাজার CCTV-ও বসানো হয়েছে ।
এবারের গঙ্গাসাগর পুণ্যার্থীদের জন্য থাকছে 3700টি বাস ৷ প্রত্যেকটিতে রয়েছে GPS পরিষেবা । দমকল মন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে । কচুবেড়িয়া এবং গঙ্গাসাগরেও এই ব্যবস্থা করা আছে । 3700 বাস ও পাঁচটি বার্জ চালু আছে । 32টা ভেসেল রাখা হয়েছে পুণ্যার্থীদের জন্য । সব গাড়িতেই GPS রাখা হয়েছে যোগাযোগের সুবিধের জন্য । সিভিল ডিফেন্স সমেত ভলান্টিয়ার রাখা হয়েছে । পরিবেশের বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে । জেলা শাসকের কার্যালয়ে অভিযোগ জানানোরও ব্যবস্থা রয়েছে ৷