গঙ্গাসাগর, 19 অগস্ট: নদী গ্রাসে ঘোড়ামারা দ্বীপ ৷ বর্তমানে এই দ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় 2500 জন ৷ নদী ভাঙ্গন ও একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে ক্রমশই জলের তলায় চলে যাচ্ছে এই দ্বীপ ৷ ঘোড়ামারা দ্বীপের বাসিন্দাদের আতঙ্কের অন্যতম কারণ নদী ভাঙন। ভাঙনের জেরে একটু একটু করে ছোট হচ্ছে দ্বীপ ৷ আতঙ্কে দ্বীপ ছাড়ছে বাসিন্দারা ৷ এলাকাবাসীর ঠাঁইনাড়া এড়াতে দুদিন গঙ্গাসাগরের ধসপাড়া এলাকার সুমতি নগর 2নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় কমলপুরের কাছে ঘোড়ামারা দ্বীপের ভাঙ্গন কবলিত 30টি পরিবারের জন্য নবনির্মিত কলোনির শিলান্যাস করলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা ।
ঘোড়ামারা দ্বীপের একদিকে হুগলি ও মুড়িগঙ্গা নদী ৷ অন্যদিকে বটতলা নদী ও বঙ্গোপসাগর চারদিকে জলরাশি আর মাঝখানে ছোট্ট ঘোড়ামারা দ্বীপ । ঘোড়ামারা দ্বীপের মোট আয়তন ছিল 130 বর্গকিলোমিটার ৷ ভাঙ্গনের ফলে সেই আয়তন এসে দাঁড়িয়েছে 25 বর্গ কিলোমিটারের এসে দাঁড়িয়েছে । প্রতিনিয়ত ঘোড়ামারা দ্বীপ ভেঙেই চলেছে । তাই দ্বীপবাসীদের ঠাঁইনাড়া আটকাতেই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার ৷ আপাতত 30টি পরিবার পুনর্বাসন পেয়েছে ৷ নবনির্মিত কলোনির শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল । পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাবিনা বিবি, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি স্বপন কুমার প্রধান ও জেলা পরিষদের সদস্য সন্দীপ কুমার পাত্র ।
শুধু তাই নয় ঘোড়ামারা দ্বীপের ভাঙ্গন কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি স্বনির্ভর করতেও উদ্যোগ নেওয়া ৷ রাজ্য সরকারের তরফ আধুনিক একটি করে পোল্ট্রি ফার্ম তৈরি হবে স্থানীয়দের স্বনির্ভর করেত ৷ সরকারের পক্ষ থেকে মুরগির বাচ্চাও প্রদান করা হবে স্থানীয়দের । এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েই সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, "প্রতিনিয়ত ঘোড়ামারা ভাঙছে ৷ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ঘোড়ামারা দ্বীপের মানুষজনকে পুনর্বাসন দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে । ভাঙ্গন কবলিত ঘোড়ামারা থেকে বেশকিছু পরিবারকে ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগরের বেশ কিছু জায়গায় তাদেরকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে ৷ আজ প্রায় 1কোটি 36 লক্ষ টাকা ব্যয়ে ঘোড়ামারার দ্বীপের ভাঙ্গন কবলিত এলাকার প্রায় 30টি পরিবারকে নবনির্মিত কলোনিতে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে ।"
আরও পড়ুন: নদী বাঁধ মেরামতি করাচ্ছেন গ্রামবাসীরা, খবর পেতেই ঘুম ভাঙল সেচ দফতরের
এই বিষয়ে ঘোড়ামারা দ্বীপের এক বাসিন্দা সুরজিৎ বর বলেন, "নদী ভাঙ্গনের ফলে কার্যত আমাদের ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল । পুনর্বাসনের জন্য মাননীয় মন্ত্রীর কাছে আমরা আবেদন জানিয়েছিলাম । অবশেষে মিলল পুনর্বাসন ৷" বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি রাজ্য সরকার এই দ্বীপকে বাঁচাতে কোনওরকম স্থায়ী ব্যবস্থা না নেয় তা-হলে আর কয়েক বছরের মধ্যে এই দ্বীপ লোহাচর দ্বীপের মতন সমুদ্রে গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে ।