কাকদ্বীপ, 26 অক্টোবর : একবিংশ শতাব্দীতেও কুসংস্কারের ছায়া কাকদ্বীপে । প্রতিদিনের মতো মাছ ধরতে গিয়েছিলেন কাকদ্বীপের তিলক চন্দ্রপুরের মৎস্যজীবী সঞ্জয় সরকার । শনিবার বিকেলে সঞ্জয়ের জালে কয়েকটি ঝিনুক ওঠে । সেই ঝিনুকের গায়ে বিভিন্ন ধর্মের প্রতীক মিলেছে বলে হইচই শুরু করে দেন তিনি । তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসেন পাড়া-প্রতিবেশীরা ৷ এরপর বিষয়টিকে অলৌকিক ধরে নিয়ে একটি মন্দিরে ঝিনুকগুলিকে নিয়ে গিয়ে রাখা হয় । এখন দলে দলে মানুষ সেই ঝিনুক দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন মন্দিরে ।
ঘটনাটি চাউর হতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিজ্ঞান মঞ্চ । তাদের দাবি এ সব বুজরুকি । বিজ্ঞান মঞ্চের দাবি মানতে চাইছে না গ্রামবাসীরা । সঞ্জয় সরকার বলেন, "এটি ভগবানের দান ৷ পুকুরে মাছ ধরার সময় এই ঝিনুকগুলি আমার জালে পড়েছিল । পরে আমার ভাগ্নি সেগুলো ভেঙে দেখতে পায়, তার ভিতরে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতীক রয়েছে । আমরা সেগুলি পাশের মন্দিরে প্রতিমার কাছে রেখে দিয়ে পুজো করছি ।"
আরও পড়ুন : Giant Bhola Fish : সুন্দরবনের নদীতে মানুষ সমান তেলে ভোলা, বিক্রি হল 50 লাখে
ঝিনুকের গায় এভাবে প্রতীক ফুটে উঠল কীভাবে ? সঞ্জয়ের পাল্টা দাবি, "বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে ? সকলে নিজের চোখে দেখেছে ।" বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য তথা শিক্ষক সৌম্যকান্তি জানার নেতৃত্বে একটি দল গ্রামে পৌঁছে গ্রামবাসীদের সচেতন করার চেষ্টা করে । কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে তাঁদের ।
ইতিমধ্যে অন্য গ্রামের বহু মানুষ তিলক চন্দ্রপুরে আনাগোনা শুরু করেছে । বিজ্ঞান মঞ্চ দাবি, অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারে উপর ভর করে হয় লোকজন আসছে। এই কুসংস্কার বন্ধ করতে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে । বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য সৌম্যকান্তি জানা বলেন, "ঝিনুকের মধ্যে মুক্তো পাওয়া যায় জানতাম, তা বলে বিভিন্ন ধর্মের প্রতীক ? পুরোটাই ভাওতাবাজি, মনের কল্পনা । এর পিছনে কিছু মানুষের স্বার্থ জড়িত থাকলেও থাকতে পারে । বিষয়টি আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানাব । দ্রুত এই এসব বন্ধ করা না গেলে, শিক্ষিত সমাজ ও নতুন প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা যাবে ।"