সুন্দরবন, 23 মে : গাঙ্গেয় উপকূল ও সুন্দরবনের নদ নদীতে লুপ্তপ্রায় বাটাগুর বাসকা বা সোনাকাঠা কচ্ছপের সংখ্যা বাড়াতে আগামী 10 বছর ধরে পাইলট প্রজেক্ট চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প (এসটিআর) এবং টার্টেল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স (টিএসএ)। সোমবার আন্তর্জাতিক কচ্ছপ দিবস উপলক্ষে সুন্দরবনের সজনেখালিতে আয়োজিত হয় একটি বিশেষ কর্মশালা (Turtle In Sundarbans)৷ সেখানেই লুপ্তপ্রায় এই কচ্ছপের সংরক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় ৷ পাশাপাশি ট্রান্সমিটার বসানো একটি কচ্ছপকেও এদিন গভীর জঙ্গললাগোয়া নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয় ।
বাটাগুর বাসকার প্রজাতির কচ্ছপের চলাফেরা, পছন্দের পরিবেশ ও যাত্রাপথ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য জানতে গত 19 জানুয়ারি 9 টি কচ্ছপের দেহে ট্রান্সমিটার লাগিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল নদীতে । তারমধ্যে দুটি কচ্ছপ চলে গিয়েছিল বাংলাদেশে ৷ সেই দেশের বনবিভাগ ট্রান্সমিটার লাগানো দুটি কচ্ছপকেই উদ্ধার করে । সেই দুটি কচ্ছপকে আগামী 25 মে ছেড়ে দেওয়া হবে নদীতে । তবে এই ট্রান্সমিটার লাগানো কচ্ছপগুলির থেকে বহু তথ্য হাতে আসে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও টার্টেল সারভাইভাল অ্যালায়েন্সের গবেষকদের কাছে । সোমবার আয়োজিত কর্মশালায় সেই তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হয় । 2012 সালের তথ্য অনুযায়ী সুন্দরবনের এই কচ্ছপের সংখ্যা ছিল 12 টি । কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে 370 । এবার লুপ্তপ্রায় কচ্ছপদের বাঁচাতে সুন্দরবনের স্কুলের পড়ুয়া এবং স্থানীয় মৎস্যজীবীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে । সোমবার কচ্ছপ নিয়ে একটি পোস্টারও প্রকাশ করা হয় । যেখানে স্থান পেয়েছে প্রায় 20 টি কচ্ছপ । যার মধ্যে গাঙ্গেয় কাছিম, (নিলসনিয়া গ্যাঞ্জেটিকা), ময়ুরপঙ্খী (নিলসনিয়া হুরাম)-সহ প্রায় 14 টি কচ্ছপ লুপ্তপ্রায় প্রজাতির তালিকায় রয়েছে । এদিনের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (প্রধান বনবল) জেটি ম্যাথেউ, প্রধান মুখ্য বনপাল(বণ্যপ্রাণ) দেবল রায়, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা তাপস দাস-সহ ক্ষেত্র অধিকর্তা জোনস জাস্টিন, টার্টেল সারভাইভাল অ্যালায়েন্সের ডিরেক্টর শৈলেন্দ্র সিং প্রমুখ ।
আরও পড়ুন : কচ্ছপের দেহে ট্রান্সমিটার বসাল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প
ক্ষেত্র অধিকর্তা তাপস দাস বলেন, "আগামী 10 বছর ধরে সুন্দরবনের নদ নদীতে বাটাগুর বকসার প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ হবে ৷ ইতিমধ্যেই ডিম ফুটে বাচ্ছাও তৈরি করা হয়েছে । অবলুপ্তির হাত থেকে এই ধরনের কচ্ছপকে বাঁচাতে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । আগামী দিনে আরও অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।"