কোচবিহার, 14 জুলাই : সেও অমানবিক, তবু খাঁচায় বন্দী পাখি কিংবা জন্তু জানোয়ারের কথা জানা মানুষের । কোচবিহারের ঝিলিকও খাঁচাবন্দি ছিল বছরের পর বছর ধরে । মাথাভাঙা 2 ব্লকের পারডুবি গ্রাম পঞ্চায়েতের বরাইবাড়ি এলাকার 19 বছরের বিশেষভাবে সক্ষম যুবতী ঝিলিককে বাধ্য হয়ে এভাবেই রেখেছিলেন বাড়ির লোকেরা । সেই কথা জানাজানি হতে হইচই পড়ে যায় । বুধবার ঝিলিককে খাঁচামুক্ত করে ব্লক প্রশাসন ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মের পর থেকেই ঝিলিকের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় ৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে উঠলেও মেয়ে কথা বলতে বা স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারত না ৷ আজও একই অবস্থা ৷ ঝিলিকের পরিজনদের অভিযোগ, 75 শতাংশ প্রতিবন্ধীর শংসাপত্র থাকলেও মেলেনি কোনওরকম সরকারি সাহায্য ৷ কিন্তু ঝিলিককে ওভাবে খাঁচাবন্দি রাখা কেন ?
পরিবারের যুক্তি, হাঁটাচলা করতে পারে না বলেই তাঁকে বাড়িতে একটি কাঠের খাঁচায় বন্দী করে রাখা হয়েছিল । অসুস্থ মেয়ের ভালর জন্যই এই ব্যবস্থা করেছিলেন তাঁরা ৷ যাতে করে সে কোনওভাবে চোখের আড়ালে না যায় ৷
ঝিলিকের মা সুচিত্রা বর্মন বলেন, "দিনের বেলায় কাঠের ঘেরার মধ্যেই রাখতাম মেয়েকে । যাতে পড়ে গিয়ে বিপদ না হয় ৷ সরকারি সাহায্য পেলে কিছুটা সুরাহা হত ৷ কিন্তু বহু আবেদন নিবেদনেও কাজ হয়নি ।"
আরও পড়ুন: চিকিৎসার খরচ নেই, মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে সামলাতে ভরসা শিকলই
বুধবার ঘটনা জানাজানি হতে ঝিলিকের বাড়িতে আসেন ঘোকসাডাঙ্গা থানার ওসি (OC) অজিত কুমার শা, ব্লকের বিডিও (BDO) উজ্জ্বল সর্দার, মাথাভাঙ্গা দুই নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীপ্তি তরফদার রায়, ঘোকসাডাঙ্গা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিএমএইচও (BMHO) ডক্টর সুভাষ গায়েন সহ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা । ঝিলিকের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা । এখন দেখার আশ্বাস আশ্বাসই থাকে, নাকি তা বাস্তবে পরিণত হয় ৷