কোচবিহার, 27 জানুয়ারি : নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে হঠাৎ মোটা টাকা আয়ের প্রলোভন । আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে নিখোঁজ 6 জন । ভিনদেশে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছেন 6 শ্রমিক । কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের সারোহাটি গ্রামের ঘটনা ।
ভুটানে দৈনিক 1500 টাকার মজুরির প্রলোভন দেখিয়েছিল আইজল হক নামে এক ঠিকাদার । গত বছরের ডিসেম্বর মাসে রঘুনাথ রায় (33), শ্রীনাথ রায় (33), ধনঞ্জয় রায় (27), রঞ্জিত রায় (31), কল্যাণ রায় (24), কৃষ্ণচন্দ্র রায় (27) ভুটানে যায় ।
পরিবারসূত্রে জানা যায়, গত মাসের 20 তারিখ থেকে শ্রমিকরা তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন । ভুটানের এক সংস্থা তাদের সঙ্গে নাকি 1 বছরের চুক্তি করেছে, আইজল হক জানিয়েছিল । চুক্তির ভিত্তিতেই শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে পারবে না ৷ শ্রমিকদের পরিবারের দাবি, ওঁদের আটকে রাখা হয়েছে । ওখানকার কয়েকজন আমাদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না । ঠিকাদার আইজল হকও চম্পট দিয়েছে ।
গত 20 ডিসেম্বর, এক জন শ্রমিক তাঁর পরিবারে জানিয়েছিলেন, ''এখানে খেতে দিচ্ছে না । বাড়িও ফিরতে দিচ্ছে না । টাকা-পয়সাও দিচ্ছে না ৷ শারীরিক অত্যাচারও চালাচ্ছে ।
অভিযোগ উঠছে, ঠিকাদার আইজল একবছরের চুক্তির টাকা ভুটানের ওই সংস্থার কাছ থেকে অগ্রিম নিয়ে চম্পট দিয়েছে । রঘুনাথ রায়ের স্ত্রী মিনতি রায়, ধনঞ্জয় রায়ের স্ত্রী সংগীতা রায় বলেন, ''আইজলের বাড়ি ধুপগুড়ি এলাকায় । অতিরিক্ত দৈনিক মজুরির প্রলোভন দেখিয়ে আমার স্বামীকে ভুটানে নিয়ে গেছে । প্রথম প্রথম ফোনে কথা হচ্ছিল আমাদের সঙ্গে । গত 1 মাস ধরে আর কথা হচ্ছে না । খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছি । কবে বাড়ি ফিরে আসবে জানি না।''
হতাশায় দিন কাটছে 6 শ্রমিকের পরিবারের ৷ প্রশাসনের দ্বারস্থও হয়েছেন তাঁরা ৷ মেখলিগঞ্জের BDO ইউডেন ভুটিয়াকে ব্যাপারটি জানানো হয়েছে । তিনি জানিয়েছেন, "পরিবারের কাছে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে ।" এছাড়া মহকুমাশাসক রামকুমার তামাঙ জানান, মৌখিকভাবে খবর পেয়েছি । পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানালে ভুটান সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে ।''