কলকাতা, 21 জুন : "বাংলায় অনেক সুযোগ আছে, এখানেই থাকুক পড়ুয়ারা ।" রাজ্যে উচ্চশিক্ষা ও চাকরির সুযোগের খতিয়ান দিয়ে পড়ুয়াদের উদ্দেশে ফের একথা বললেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । প্রতিবছরই রাজ্যের পড়ুয়াদের ভিনরাজ্যে না যাওয়ার জন্য বলে থাকেন শিক্ষামন্ত্রী । তারপরও ভিনরাজ্যে পাড়ি দেয় পশ্চিমবঙ্গের পড়ুয়ারা । গতকাল রাজ্য জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতীদের মধ্যে বেশিরভাগই অন্য রাজ্যে গিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন । কারণ হিসেবে, যাদবপুরে আন্দোলন ও রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির শিক্ষার পরিবেশকেই দায়ি করেছেন তাঁরা । আজ নেতাজি ইন্ডোরে অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রফেশনাল অ্যাকাডেমিক ইন্সটিটিউশন (APAI)-এর এডুকেশন এগজ়িবিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে পড়ুয়াদের পশ্চিমবঙ্গে থাকার অনুরোধ করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "খবরে দেখলাম যাঁরা কৃতী তাঁরা বাইরে চলে যাচ্ছেন পড়াশোনার জন্য । এখানে কি অভাব আছে কিছুর? দেখলাম এখানের বোর্ডের থেকে অন্য বোর্ড ভালো । আমাদের রাজ্যের শিক্ষকরা তো বাইরেও পড়াতে যান । রাজ্যের পড়ুয়ারাও বাইরে পড়াতে যান । এই যে হেরিটেজ, অ্যাডামাস, UEM যা চোখের সামনে দেখছি তাঁদের পড়ানোর জায়গাটা কোথায়? সেটা তো এখানেই । এমন একটা সময় বলুন যখন কেউ বাইরে পড়তে যায়নি । ব্যারিস্টারি পড়তে জ্যোতিবাবু বাইরে গেছিলেন, সিদ্ধার্থ রায় গেছিলেন । এমন অনেকেই আছেন তালিকায় । আবার অমর্ত্য সেন রাজ্যে পড়াশোনা করে বাইরে গেছেন শিক্ষকতা করতে । তাঁদের সময় তো কেউ বলত না উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে চলে যাচ্ছে । বরং সকলে আনন্দ পেতেন । বাইরে যাওয়ার একটা মোহ তৈরি হয়েছিল একসময় যখন এখানে অভাব ছিল । এখন তো রাজ্যে কিছুর অভাব নেই।" অন্যদিকে, তিনি APAI-এর উদ্দেশে বলেন, "আপনারাও একটা টিম করে দেখুন যে ছাত্রছাত্রীরা ঠিকমত আসছে কি না, পরিকাঠামো ঠিক আছে কি না, তাঁদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না, বই, সিলেবাস ঠিকঠাক হচ্ছে কি না ।"
এই সংক্রান্ত আরও খবর : জয়েন্টের মেধাতালিকায় রাজ্য বোর্ডের মাত্র এক
রাজ্য জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী সোহম মিস্ত্রি বাংলায় না পড়ার কারণ হিসেবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন । সেই বিষয় আজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আগে যত লোক বাইরে চলে যেত তার থেকে অনেক বেশি এখন এখানে পড়ে । যে সুযোগটা আগে এখানে ছিল না, সেই সুযোগটা এখন এখানে আছে বলেই তাঁরা এখানে পড়ে । একথা ঠিক যে দু'একটি জায়গায় ছাত্র-অসন্তোষ আছে বা অন্য কোনও অসন্তোষ আছে । সেসমস্ত প্রতিষ্ঠানের বিষয়গুলো তো আমরা দেখবই । যারা চলে যাবে তারা যে সবাই যাদবপুর প্রেসিডেন্সিতে সুযোগ পেত এটা ভাবার কোনও কারণ নেই । আমি অনেককে দেখেছি জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ভালো নম্বর পেয়েছে, অথচ যাদবপুরে ওয়েটিংয়ে আছে । তাই আমি বলব, এখানে সুযোগ আছে । এখানে অনেক বেশি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে । অনেক বেশি কলেজ আছে, মেডিকেলের ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা বেড়েছে । সুতরাং, কেউ রাজ্যের বাইরে যাবে কেন? এখানেই থাকুক না । এখানেই পড়াশোনা করল, এখানেই ফাউন্ডেশন তৈরি করল । তারপর সেই ফাউন্ডেশনটাকে অন্যত্র নিয়ে গেলে তো ভালো হবেই । কারণ, ফাউন্ডেশন স্ট্রং । সেটা এখানকার পরিবেশ, এখানকার পরিকাঠামো, এখানকার শিক্ষক, অ-শিক্ষক, অভিভাবক সবাই মিলে তৈরি করেছে ।"