কলকাতা, 19 এপ্রিল : আধার কার্ডের জন্য প্রয়োজন দুই হাতের আঙুলের ছাপ। কিন্তু আগুনে পুড়ে যাওয়ায় বাঁ হাতের একটি আঙুলও কাজ করে না গৌরীর। তাই নিজের আধার কার্ড বানাতে পারছেন না তিনি। গতকাল হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়, আগামী বুধবারের মধ্যে তাঁর আধার কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে।
গৌরী প্রামাণিকের বাড়ি দক্ষিণ 24 পরগনার সোনারপুরে। বয়স 30। ছোটোবেলায় আগুনে পুড়ে গিয়ে অকেজো হয়ে যায় তাঁর বাঁ হাত। পরে অবশ্য 40 শতাংশ প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকারি শংসাপত্র পেয়েছেন। পেশায় পরিচারিকা। যা আয় করেন সেখান থেকে কিছু টাকা ব্যাঙ্কে জমান। 2015 সালে তাঁর বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবার চিকিৎসার জন্য ব্যাঙ্কে ঋণের জন্য আবেদন করেন তিনি। কিন্তু ব্যাঙ্ক আধার কার্ড ছাড়া ঋণ দিতে চায় না। পরে ব্যাঙ্কে তিনি লিখিতভাবে জানান যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুসারে আধার কার্ড এখন আর বাধ্যতামূলক নয়। তা সত্ত্বেও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁকে ঋণ দেয়নি। তবে এই সংক্রান্ত মামলা দায়ের হওয়ার পর অবশ্য ব্যাঙ্কের তরফে তাঁকে ঋণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঁ হাতের আঙুল অকেজো হওয়ায় ছাপ দিতে পারেন না তিনি। তাই আধার কার্ড বানানো হয় যে কেন্দ্রগুলিতে সেগুলির দরজায় দরজায় ঘুরতে হয় তাঁকে। কিন্তু কেউই তাঁর কার্ড বানিয়ে দেয়নি। বাধ্য হয়েই শেষমেশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
গতকাল মামলাটি বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বেঞ্চে উঠলে মামলাকারীর তরফে আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায়চৌধুরি বলেন, "আধার কার্ডের জন্য 'ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া'-কে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা মেলেনি।" এরপর মামলায় উপস্থিত আধার কর্তৃপক্ষের আইনজীবীর কাছে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, "আইনে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ওই যুবতির আধার কার্ড করা হচ্ছে না কেন?" সেইসঙ্গে বিচারপতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, "আগামী বুধবারের মধ্যে যুবতির আধার কার্ডের ব্যবস্থা করুন। আগামী বুধবার আবার এই মামলার শুনানি হবে।"