কলকাতা, ৬ এপ্রিল : রাজারহাটকে রীতিমতো মুঙ্গের বানানোর চেষ্টা! সেই চেষ্টাই চালাচ্ছিল শেখ আলি হোসেন ওরফে মুন্না। নারায়ণপুর থানা এলাকার ছোটো গাঁথি ও দোননগরে অস্ত্র কারখানার পর পাওয়া গেল আরও এক অস্ত্র কারখানার হদিশ। সেটিও চালাত মুন্না। আজ ছোটো গাঁথি এলাকায় সেই অস্ত্র কারখানায় তল্লাশি চালায় স্পেশাল টাস্কফোর্সের সদস্যরা। উদ্ধার হয় ১০টি ৭ mm পিস্তল। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম।
বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের টাস্কফোর্স গ্রেপ্তার করেছিল সাদাকত, টারজ়ান, ঋষি কুমার এবং সুমন কুমারকে। এদের মধ্যে ঋষি ছাড়া বাকিদের বাড়ি বিহারের মুঙ্গেরে। ঋষির বাড়ি বিহারের বাঙ্কায়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৩০ টি দেশি ৯ mm পিস্তল। চারজনকে জেরা করে জানা যায় রাজারহাটের অস্ত্র কারখানার কথা। তারপর সন্ধ্যায় নারায়ণপুর থানা এলাকার ছোটো গাঁথি ও দোননগরে বেআইনি অস্ত্র কারখানায় হানা দেয় STF (স্পেশাল টাস্ক ফোর্স) এবং নারায়ণপুর থানার পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার হয় আরও ৬০ টি আগ্নেয়াস্ত্র। গ্রেপ্তার করা হয় দুই "ইঞ্জিনিয়র" সহ কারখানার মালিক মুন্নাকে।
মুন্নার কাছ থেকে অস্ত্র ছাড়াও উদ্ধার হয় আট লাখ আশি হাজার টাকার জাল নোট। কারখানা থেকে মুন্নার দুই সাগরেদ বা "ইঞ্জিনিয়রকে"। তাদের নাম শামিম আলম এবং মহম্মদ সোনু। মুন্নাকে জেরা করে জানা যায়, আরও একটি অস্ত্র কারখানা চালাত সে। টাস্কফোর্স সেখানে গিয়ে দেখতে পায় অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট সেই ঘরে বসানো আছে লেদ মেশিন। আছে তৈরি হওয়া পিস্তলও। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১০টি পিস্তল।
জানা গেছে, কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় গজিয়ে ওঠা একাধিক অস্ত্র কারখানার সঙ্গে মুঙ্গেরের যোগসূত্র রয়েছে। এই কারখানাগুলিতে অস্ত্র তৈরি করছে বিহারের "বিখ্যাত মুঙ্গেরি ইঞ্জিনিয়ররা"। তৈরি অস্ত্র চলে যাচ্ছে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে। পুলিশের সূত্র জানাচ্ছে, সেই অস্ত্র ব্যবহার করছে জামাত জঙ্গিরা। বিনিময়ে এদেশে ঢুকছে জাল নোট।
গোটা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু বলেন, "ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছি আমরা। রিপোর্ট খতিয়ে দেখে নেওয়া হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।"