কলকাতা, ১৫ মার্চ : অধীর চৌধুরীর একসময়ের ছায়াসঙ্গী। খাতায় কলমে তিনি এখনও কংগ্রেস বিধায়ক। দল বদলে তৃণমূলে এসেছেন। এবার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে অধীরের বিরুদ্ধেই প্রার্থী তিনি। ফলে চড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। প্রচার শুরুর আগেই একদা 'শিষ্য' কড়া দাওয়াই দিতে শুরু করেছেন গুরুকে। ETV ভারত কথা বলল সেই অপূর্ব সরকারের সঙ্গে।
ETV ভারত : আপনার প্রতি নেত্রী আস্থা রেখেছেন, কতটা সফল হবেন?
অপূর্ব সরকার : প্রথমেই মা- মাটি-মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাই, প্রণাম জানাই। একজন সাধারণ পরিবারের সদস্যকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকেও।
ETV ভারত : একসময় অধীর চৌধুরির খুব কাছের ছিলেন, তার কোনও প্রভাব পড়বে না?
অপূর্ব সরকার : আমরা অধীরবাবুর মূল সৈনিক ছিলাম বলতে পারেন। আমরা সবাই কখনও জেল খেটেছি, কখনও খুন হতে হতে বেঁচেছি। হাসপাতালে ভরতি থেকেছি। শয়ে শয়ে ছেলেরা ঘরের বাইরে থেকেছে CPI(M)-র জমানায়। আমরা যদি পিরামিড দেখি, পিরামিডের ভিত যদি না থাকে, তবে নিশ্চয় পিরামিড ঠিক থাকবে না। পিরামিডের মাথায় ছিলেন অধীর। আমরা ছিলাম পিরামিডের ভিত। স্বাভাবিকভাবেই ভিতের সমস্ত ইট আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সামিল করেছি। তাই আগামীদিনে কী ফল হবে বুঝতেই পারছেন।
ETV ভারত : কংগ্রেস প্রচারে করছে আপনারা সুবিধাবাদী রাজনীতি করছেন, সেটা কতটা ..?
অপূর্ব সরকার : কে সুবিধাবাদী রাজনীতি করছে? আমরা না কি কংগ্রেসের উচ্ছিষ্ট! তা ভালো! আমরা যখন রাজভোগ ছিলাম তখন রাজভোগ খেয়ে টুক টাক যা পড়ে থাকে...। আমাদের রাজভোগ খেয়ে মহারাজা হয়েছেন। তাঁকে মনে করিয়ে দিতে চাই, একদিন রাম চ্যাটার্জির ফরোয়ার্ড ব্লক, ক্ষিতি গোস্বামীর RSP, CPI(M)-র জ্যোতিবাবুর হাত মাথায় ছিল তাঁর। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক উচ্ছিষ্ট কে তা বলার অপেক্ষা রাখে কি? এটা মানুষের কাছে আমরা বলব। আমরা মানুষের কাজ করি। রাজনৈতিক উচ্ছিষ্ট কি না তা মানুষ বিচার করবে। আগের ইতিহাস মানুষ দেখেছে। আমরা কংগ্রেসের গদ্দার। কে গদ্দার বানিয়েছে? তিনি কি ফরোয়ার্ড ব্লকের উচ্ছিষ্ট? তিনি কি কংগ্রেস দলের উচ্ছিষ্ট?
ETV ভারত : আপনি প্রচারে কোনটিকে গুরুত্ব দেবেন? উন্নয়ন? না কি অধীর বা কংগ্রেসের বিষয়?
অপূর্ব সরকার : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন। মোদি সরকারের পাঁচ বছরের উন্নয়ন একদিকে থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সামনে রেখেই নির্বাচনী লড়াই করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাজনৈতিক বার্তা গোটা ভারতবর্ষের বুকে দিচ্ছেন, বাংলার বুকে দিচ্ছেন, সেটাই মানুষের কাছে পৌঁছে দেব। আমার কালচারে নেই ব্যক্তি কুৎসা করা। আমি যেদিন অতীশবাবুর (অতীশ চন্দ্র সিংহ) বিরুদ্ধে লড়েছিলাম সেদিনও তাঁর বিরুদ্ধে একটি কথাও বলিনি। তাঁর যা বংশ মর্যাদা, গরিমা, যোগ্যতা, তাঁর নখের যোগ্য ছিলাম না আমি। তাঁকে এখনও শ্রদ্ধা করি।
ETV ভারত : জয়ের বিষয়ে কতটা আশাবাদী?
অপূর্ব সরকার : ১০০ শতাংশ আশাবাদী। মানুষের প্রতি আস্থা আছে। ভরসা আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে নেত্রী, শুভেন্দু অধিকারী যেখানে নেতৃত্ব দেবেন। অবশ্যই ভরসা আছে।
ETV ভারত : অধীর চৌধুরি বা কংগ্রেস জয়ের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না?
অপূর্ব সরকার : রাজনীতির জায়গায় প্রতিবন্ধকতা কীসের? মানুষ ভোট দেবে আনন্দ করবে। এর আগেও ভোট দিয়েছে। হেরে যাওয়ার ভয়ে বুথ দখল, কত রকম গল্প নাটক আসবে। আমি বলব রাজনৈতিক কথা।