শান্তিনিকেতন, 14 ডিসেম্বর: ‘‘জমির ব্যাপারে যা অন্যায় উনি (অমর্ত্য সেন) করেছেন, সে অন্যায় আমি ক্ষমা করব না ৷’’ জমি বিতর্কে নাম না করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে ফের নিশানা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Visva Bharati VC Bidyut Chakrabarty Criticises Amartya Sen) ৷ এর আগেও অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর জমি দখল (Land Controversy) করে রেখেছেন বলে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন উপাচার্য ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ আবারও অমর্ত্য সেনকে নিয়ে বিস্ফোরক উপাচার্য ৷ আর এই জমি ইস্যুতে নাম না করেই উপাচার্য দাবি করেছেন, বাঙালিদের মধ্যে অমর্ত্য সেনকে নিয়ে মিথ্যে অভিমান রয়েছে ৷
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার সময় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম সঙ্গী ছিলেন ক্ষিতিমোহন সেন ৷ সম্পর্কে যিনি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের দাদু ৷ স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই অর্থনীতিবিদের 'অমর্ত্য' নামকরণ করেছিলেন ৷ কবিগুরুর জীবদ্দশায় থেকেই শান্তিনিকেতনে ‘প্রতীচী’ নামে বাড়ি রয়েছে সেন পরিবারের ৷ যেখানে বর্তমানে অমর্ত্য সেন থাকেন ৷ যা নিয়ে সাম্প্রতিককালে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অভিযোগ করেছিলেন, বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রয়েছেন অমর্ত্য সেন ৷ আর তাঁর সেই অভিযোগের জেরে বিতর্কে জড়ান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷
উপাচার্যের সেই মন্তব্যের জেরে সরগরম হয়ে উঠেছিল, রাজ্য তথা দেশের রাজনীতি ৷ বোলপুরে এসে প্রতিবাদ মিছিল করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পরবর্তী সময়ে শান্তিনিকেতনে এসে উপাচার্যের অভিযোগের জবাবে জমি জরিপে প্রস্তাবও দিয়েছিলেন অমর্ত্য সেন ৷
গত কয়েকমাসে সেই বিতর্ক যে ছাই চাপা আগুনের মতো ধিক ধিক করে জ্বলছিল, তা ফের একবার বুঝিয়ে দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ সেই বিতর্ককে ফের উস্কে দিলেন তিনি ৷ এদিনও বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের ঘেরাটোপে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বাসভবনে ফেরেন উপাচার্য ৷ পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে নিরাপত্তারক্ষীদের ধন্যবাদ জানান তিনি ৷ সেই সময় তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর 67 একর জমি কবজা করে রেখেছে ৷ তাতে বড় বড় লোকও আছে ৷ কিন্তু, সেই বড় বড় লোকের নাম করলে বাঙালিরা আমাকে খেয়ে ফেলবে ৷ কারণ বাঙালিদের মধ্যে মিথ্যে একটা অভিমান আছে ৷ যেহেতু বড় লোক হয়ে গিয়েছেন ৷ তিনি যদি চুরিও করেন বলতে পারব না ৷ তবে আমি বলেছি ৷ আপনারা জানেন আমি কার কথা বলছি ৷’’
আরও পড়ুন: আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়লেন উপাচার্য ! ফের উত্তেজনা বিশ্বভারতীতে
এর পরেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের নাম না করে উপাচার্য বলেন, ‘‘জমির ব্যাপারে যে অন্যায় উনি করেছেন, তা আমি ক্ষমা করব না ৷ ওনার পড়াশোনার দিকে যে নাম, সেটা আমি খুবই শ্রদ্ধা করি ৷ বিশ্বভারতীর সঙ্গে অন্যায় করেছেন, তাঁর প্রতি আমার কোন শ্রদ্ধা নেই ৷’’ এক কথায় অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রেখেছেন, এই অভিযোগ তুলে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷’’