শান্তিনিকেতন, 1 সেপ্টেম্বর : টানা কয়েক দিন ধরে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ এবার তাই কর্মী, আধিকারিক ও অধ্যাপকদের বেতন বন্ধ করে দিলেন তিনি ৷ এমনকী, বিশ্বভারতীর অস্থায়ী কর্মী, নিরাপত্তারক্ষী ও পেনশনভোগীদের টাকাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ অধ্যাপকদের বক্তব্য, ছাত্র আন্দোলনকে কাঠগড়ায় তুলতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন কাণ্ড ঘটানো হয়েছে ৷ তাঁরা জানান, বেতন প্রক্রিয়ায় সশরীরে উপাচার্যের উপস্থিত থাকার প্রয়োজন হয় না ৷ অন্যদিকে উপাচার্যের দাবি, ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত কয়েক দিন ধরে নাকি খাবারই পাচ্ছেন না তিনি ! এমনকী, বিষয়টি নিয়ে আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও পাঠিয়েছেন বিদ্যুৎ ৷ যদিও এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই পাল্টা দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা ৷ তবে উপাচার্যের অভিযোগ সামনে আসায় বুধবার উপাচার্যের বাড়ির দরজায় দুধ, কলা-সহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন তাঁরা ৷ কিন্তু, সেসব কেউ ছুঁয়েও দেখেননি ৷
আরও পড়ুন : Visva-Bharati University : উপাচার্যের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন বিশ্বভারতীতে
গত 27 অগস্ট থেকে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাসভবন ‘পূর্বিতা’ ঘেরাও করে চলছে বিক্ষোভ ৷ উল্লেখ্য, গত এক বছরে বিশ্বভারতীর 12 জন অধ্যাপক ও অধ্যাপিকাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷ এছাড়া, সম্প্রতি অর্থনীতি বিভাগের দুই ছাত্র ও সঙ্গীত ভবনের এক ছাত্রীকেও তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় ৷ এরপরই উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী ৷ উপাচার্যের বাড়ির সামনে অবস্থান মঞ্চ তৈরি করে বাড়িতেই ঘেরাও করে রাখা হয় উপাচার্যকে ৷ ঘটনা ঘিরে ক্রমশ চড়ছে রাজনীতির পারদও ৷ একদিকে, বাম-সহ বিজেপিবিরোধীরা এই আন্দোলনকে প্রকাশ্যেই সমর্থন জানাচ্ছেন ৷ অন্যদিকে, বিজেপির তরফে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুন্ডামির অভিযোগ করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন : Visva Bharati Agitation : খাবার পাচ্ছি না, অভিযোগ ঘেরাও উপাচার্যের; দুধ-কলা পৌঁছে দিলেন পড়ুয়ারা
এসবের মধ্যেই বেতন নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা ৷ প্রতি মাসের 30 কিংবা 31 তারিখের মধ্যে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সকলের বেতন হয়ে থাকে ৷ কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম হয়েছে ৷ বিশ্বভারতীর কর্মী, আধিকারিক, অধ্যাপক, অধ্যাপিকা থেকে শুরু করে অস্থায়ী কর্মী, পেনশনভোগী ও নিরাপত্তারক্ষীদেরও মাসিক বরাদ্দ আটকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখার জন্যই যে এই পদক্ষেপ, তা ই-মেল মারফত সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়েও দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷
বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, "উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সকলের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু বেতন নয়, ভর্তি প্রক্রিয়া, ফল প্রকাশ বন্ধ করে দিয়েছেন। ছাত্র আন্দোলনকে দায়ী করার জন্যই এগুলো করছেন উনি। এগুলির ক্ষেত্রে সশরীরে উপাচার্যকে উপস্থিত থাকতে হবে এমন কোনও নিয়ম নেই। তাও ঘেরাও থাকার জন্য এগুলো করছেন উপাচার্য।"