সিউড়ি, 19 জুন : সংশোধনাগারে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন বিচারাধীন বন্দীরা। একের পর এক এমনই অভিযোগ পেয়ে ক্ষুব্ধ সিউড়ি কোর্টের বিচারক সোমেশচন্দ্র পাল। সংশোধনাগারের সুপারকে ডেকে করলেন ভর্ৎসনা। ফের অভিযোগ উঠলে কড়া পদক্ষেপে নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিচারক।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার । সিউড়ি আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের (ফাস্ট কোর্ট) মাদক সংক্রান্ত মামলায় (NDPS) বিচারাধীন এক অভিযুক্ত বিচারকের সামনে তাঁর আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ করেন, বিনা প্ররোচনায় সংশোধনাগারের মধ্যে মারধর করা হচ্ছে। বিচারকের অনুমতি নিয়ে আইনজীবী ওই অভিযুক্তের শরীর পর্যবেক্ষণ করলে ক্ষত দেখতে পান। বিচারককে সেই মর্মে তিনি অভিযোগ করেন। বিচারক তৎক্ষণাৎ সিউড়ি জেলা সংশোধনাগারের সুপার আবদুলাহ কামালের কাছে রিপোর্ট তলব করেন।
বুধবার ফের পুনরাবৃত্তি ঘটে আদালতে। আর এক বিচারাধীন বন্দী অভিযোগ করেন, তাঁকে সংশোধনাগারের মধ্যে মারধর করা হয়েছে। পরপর দু-দিন একই অভিযোগ পেয়ে রুষ্ঠ হন বিচারক সোমেশচন্দ্র পাল। তিনি সিউড়ির জেলা সংশোধনাগারের সুপার আবদুলাহ কামালকে তলব করেন । কিছুক্ষণের মধ্যে আদালতে উপস্থিত হন জেল সুপার।
বিচারক, জেল সুপার ও আইনজীবীদের নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, জেল সুপার সরাসরি স্বীকার না করলেও, সংশোধনাগারে অপ্রীতিকর ঘটনা যে ঘটেছে তা পরোক্ষে স্বীকার করেন। এরপরই তাঁকে ভর্ৎসনা করেন বিচারক। ভবিষ্যতে সংশোধনাগারের কোনও আবাসিকের সঙ্গে যেন এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য তাঁকে সাবধান করে দেন বিচারক । ভবিষ্যতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিচারক সোমেশচন্দ্র পাল ।
আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “কিছুদিন থেকেই অভিযোগ পারছিলাম মক্কেলদের তরফে। প্রথমে গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু গতকাল ও আজ পরপর ঘটনায় বিচারককে অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।’’
সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “সংশোধনাগারের মধ্যে কোনও আবাসিককে মারধর করা যায় না। দু'জন বিচারাধীন বন্দী অভিযোগ করেছেন। জেল সুপারকে তলব করে বিচারক ভর্ৎসনা করেছেন ।” যদিও ভর্ৎসনার কথা অস্বীকার করে জেল সুপার আবদুল্লাহ কামাল বলেন, “একটা মিটিং ছিল তাই এসেছিলাম।"