বোলপুর, 5 ফেব্রুয়ারি: "বিশ্বভারতীতে অমানুষকে বসিয়ে দিয়েছে ৷" রবিবার বীরভূমে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের জমি বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নাম না করে বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati University) উপাচার্যকে এই ভাষাতেই কটাক্ষ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Mohammed Salim slams Visva Bharati V)।
পাশাপাশি, বোলপুরের শিবপুরে শিল্পের নামে জমি অধিগ্রহণ করে আবাসন নির্মাণ প্রসঙ্গে জোরালো আন্দোলনের ডাক দেন তিনি ৷ 'হাত আছে কাজ চাই, নাহলে জমি ফেরত চাই', অনিচ্ছুক জমিদাতা চাষিদের নিয়ে এই আওয়াজ তোলেন সেলিম ।
'বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বাণিজ্যিকীকরণ ও গেরুয়াকরণ করছে': নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন জমি দখল করেছেন, এ হেন বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । এমনকী বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিভিন্ন ভাবে ভারতরত্নের তীব্র সমালোচনা করেছেন । যা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র ।
এই প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "গোটা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বাণিজ্যিকীকরণ ও গেরুয়াকরণ করে দিয়েছে । তার পরিবর্তে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে, কোটি কোটা ইনকাম করবে ৷ মোদি আর দিদি বেচে দিচ্ছে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি । রবীন্দ্রভাবনা নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী তৈরি হয়েছিল বিশ্বনাগরিক তৈরি করার জন্য । শিল্প, সাহিত্য, ভাষা প্রভৃতি দিয়ে নাগরিক তৈরি করার জায়গায় কয়েকটি অমানুষকে বসিয়ে দিয়েছে ৷ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় যেমন চৌপাট (খারাপ) হয়েছে, কেন্দ্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও চৌপাট (খারাপ) হয়েছে ।"
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠক, বিষয়টি সংসদে উত্থাপনের নির্দেশ মমতার
অনিচ্ছুক জমিদাতাদের সঙ্গে কথা: এ দিন বোলপুরের শিবপুরে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । অনিচ্ছুক জমিদাতা চাষি ও তাঁদের পরিজনেদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ৷ শিবপুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "হাতে কাজ চাই, না হলে জমি ফেরত চাই ৷ মানুষের নানাবিধ যন্ত্রণায় গোটা রাজ্যজুড়েই আন্দোলন হচ্ছে ৷ শিবপুরেও হবে ৷ কিছু দিনের মধ্যেই আন্দোলনের ঝাঁঝ দেখতে পাবেন । কারণ শিল্পের জন্য, কর্মসংস্থানের জন্য দেওয়া জমিতে যদি তা না হয়, তাহলে মানুষ মানবে কেন ?"
জমি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনের ডাক: উল্লেখ্য, বাম আমলে শিল্পের নামে বোলপুরের শিবপুর মৌজায় প্রায় 300 একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল ৷ রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূলের সরকার শিল্পের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখানে শুরু হয় আবাসন প্রকল্প । যা নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন অনিচ্ছুক জমিদাতা চাষিরা ৷ তাঁদের দাবি, শিল্প হলে জমি দেব, না হলে জমি ফেরত চাই ৷ অনুব্রতর আতঙ্কে এতকাল এই আন্দোলনের সুর চড়াতে পারেননি, এমনই অভিযোগ চাষিদের ৷ ফের নতুন করে জমি ফেরত চেয়ে পথে নামছেন চাষিরা ৷