দেউচা পাচামি, 26 ডিসেম্বর : বীরভূমের দেউচা পাচামিতে উদ্ধার হল মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার (Mao Poster in Deocha Pachami) ৷ যা ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য ৷ প্রসঙ্গত, দেউচা পাচামির প্রস্তাবিত খোলামুখ খনি (Deocha Pachami Coal Project) নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে জটিলতা ৷ তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে চলছে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি ৷ প্রশাসনের সঙ্গে বিবাদে জড়াচ্ছেন স্থানীয় আদিবাসীরাও ৷ এই প্রেক্ষাপটে মাওবাদীদের পোস্টার উদ্ধার বাড়াচ্ছে অশান্তির আশঙ্কা ৷ ওই পোস্টারে ‘মাওবাদীদের তরফে’ গ্রামবাসীর পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Deucha Pachami Coal Mine Project in Bengal: কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিতে নারাজ দেউচা-পাচামির গ্রামবাসীরা
উত্তোলনের কাজ শুরু হলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলা মুখ কয়লা খনি হতে চলেছে বীরভূমের দেউচা পাচামি ৷ এই অঞ্চলের প্রায় 3 হাজার 400 একর এলাকাজুড়ে ভূগর্ভস্থ কয়লাস্তরের (Deocha Pachami Coal Block) খোঁজ মিলেছে ৷ কিন্তু, এখানেই বংশ পরম্পরায় বাস করছেন অন্তত 21 হাজার মানুষ ৷ তাঁদের বেশিরভাগই আদিবাসী ৷ খনি তৈরি করতে জমিদাতাদের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার ৷ কিন্তু, তাতে বাসিন্দাদের মন গলেনি ৷ কয়লা খনির জন্য ভিটেমাটি ছাড়তে রাজি নন তাঁদের অনেকেই ৷
অশান্তির আশঙ্কায় দেউচা পাচামিতে পুলিশের টহলদারি চলছে ৷ কিন্তু, তারই মাঝে তৃণমূলের বাইকবাহিনী এলাকায় ঢোকায় উত্তেজনা আরও বেড়েছে ৷ বাইকবাহিনীকে আটকাতে জোট বেঁধেছেন বাসিন্দারা ৷ দু’পক্ষের বিবাদ ঠেকাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ ৷ তাতে ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ে ৷ মাঠে নামেন রাজনীতির কারবারিরাও ৷ পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ শুরু করে বামেরা ৷ এমনকী, 25 ডিসেম্বর বাঁশ, লাঠি হাতে নিয়ে আদিবাসী মহিলাদের মিছিল করতেও দেখা যায় ৷ তাঁদের মুখে ছিল পুলিশ বিরোধী স্লোগান ৷
আরও পড়ুন : Deucha Pachami Coal Block : দেউচা-পাচামির জমি অধিগ্রহণ নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ রাজ্যের
আর এসবের মধ্যেই পাচামির হরিণসিঙ্গা গ্রামে উদ্ধার হল মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার ৷ তাতে লেখা, ‘‘হাম লোগ আপ কে সাথ হউ ৷’’ অর্থাৎ, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি ৷ পোস্টারের নীচে লেখা রয়েছে সিপিআই (মাওবাদী) ৷ ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, এই পোস্টার আসল হলে বলতে হবে, মাওবাদীরা দেউচা পাচামির জটিলতাকে হাতিয়ার করে গ্রামবাসীর মধ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে ৷ তবে এই পোস্টার আদৌ মাওবাদীরাই এলাকায় সেঁটেছে কিনা, নাকি অন্য কেউ মাওবাদীদের নাম করে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷