বোলপুর ও রামপুরহাট (বীরভূম), 5 মার্চ: আরও একবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দিকে হুঁশিয়ারি ছুঁড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ বললেন, "অমর্ত্য সেনের বাড়িতে হাত দিলে আমি যা দেব না, আমায় চেনে না ।" মালদা সফর শেষে কলকাতা ফেরার পথে বোলপুর স্টেশনে দলীয় নেতা ও প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী । সেই সময় তিনি এই কথা বলেন৷ পাশাপাশি বঙ্গজননী ও পড়ুয়াদের নিয়ে অমর্ত্য সেনের হয়ে জোরদার প্রতিবাদের নির্দেশ দিয়ে যান তৃণমূল নেত্রী ৷
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে 'উচ্ছেদের হুঁশিয়ারি'র বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রয়াত আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী উত্তরাধিকার সূত্রে পুত্র অমর্ত্য সেনের নামে সম্পূর্ণ জমি রেকর্ড করে দেয় বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর । তারপরেই 6 মের মধ্যে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে জমি খালি করার নির্দেশ দেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । যা নিয়ে সিউড়ি জেলা আদালত ও কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অমর্ত্য সেন ৷ হাইকোর্ট বিশ্বভারতীর নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে ইতিমধ্যে ।
অন্যদিকে, অমর্ত্য সেনের হয়ে বিদ্বজ্জনেদের পথে নামার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । 4 মে মালদা সফরে যান মুখ্যমন্ত্রী । তখন বোলপুর স্টেশনে 5 মিনিট ট্রেন দাঁড়াতেই দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে অমর্ত্য সেনের হয়ে প্রতিবাদে নামার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন ৷ এদিন মালদায় প্রশাসনিক বৈঠক শেষে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে ফেরার পথে ফের বোলপুর স্টেশনে দলীয় নেতা ও প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ৷
তখন মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, "অমর্ত্য সেনের বাড়িতে হাত পড়লে আমি যা দেব না । আমায় চেনে না ৷" দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "মহিলাদের সামনে রাখুন৷ বঙ্গজননী ও পড়ুয়াদের নিয়ে 6 তারিখ প্রতিবাদে সামিল হন ৷" অর্থাৎ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে বিশ্বভারতী কোনও পদক্ষেপ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুপ করে বসে থাকবেন না । বোলপুর-শান্তিনিকেতন স্টেশনে দাঁড়িয়ে কার্যত এমনই হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন তিনি ৷
অন্যদিকে বোলপুরের আগে এ দিন ট্রেন কিছুক্ষণের জন্য থেমেছিল রামপুরহাট স্টেশনেও ৷ সেখানেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম জেলার তৃণমূলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করলেন কিছুক্ষণ । মুখমন্ত্রীর মামা বাড়ি রামপুরহাট থানার কুসুম্বা গ্রামে । মামা বাড়ির আত্মীয় স্বজনরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে উপস্থিত ছিলেন । তাঁদের কাছে মামা বাড়ি গ্রামের কোন মন্দির এখনও সংস্কার হয়নি, জানতে চান তিনি । সঙ্গে সঙ্গে রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই মন্দির সংস্কার করার কথা বলেন ।
রামপুরহাটে একটি বাড়ি কিনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা । সেই বাড়ি নামমাত্র কেনাই হয়েছিল, থাকা হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি । তারাপীঠ মহাশ্মশানের কাজ সম্পর্কে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী । বগটুই কাণ্ডে রামপুরহাট 1 ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আনারুল হোসেনকে গ্রেফতারের নির্দেশের পর দায়িত্ব দেওয়া হয় সৈয়দ সিরাজ জিমিকে । তাঁর সঙ্গেও কথা বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো ।
আরও পড়ুন: অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ মঞ্চ, উপাচার্যের প্রাণসংশয়ের আশংকায় চিঠি বিশ্বভারতীর