বাঁকুড়া, 14 এপ্রিল: শুক্রবার গাজনের উৎসবে বিষাদের সুর। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক তরুণীর। নাগরদোলাতে চুল আটকে 25 ফুট ওপর থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বাঁকুড়ার ভাদুল গ্রামের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা বাউরির (20)। ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
জানা গিয়েছে, চৈত্র সংক্রান্তিতে প্রত্যেক বছরের মতো এই বছরও বাঁকুড়া জেলার একেশ্বর গ্রামে বসেছিল গাজনের মেলা। শিবের গাজন উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল এই মেলার। সেই মেলাতেই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিলেন ভাদুল গ্রামের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা বাউরি। সকাল সাড়ে ন'টা নাগাদ মেলায় গিয়েছিলেন তিনি। মেলায় ঘুরতে ঘুরতে নজরে পড়ে নাগরদোলার দিকে। গাজন মেলার উৎসবে প্রিয়াঙ্কারও ইচ্ছা করে নাগরদোলায় উঠতে। সেই মতো টিকিট কেটে উঠেও পড়ে। কিন্তু তারপরেই ঘটে বিপত্তি । মারণফাঁদ যে তাঁর মুঠো ফোন পেতেছে, তিনি নিজেও বুঝতে পারেননি । নাগরদোলা চলাকালীন প্রিয়াঙ্কা সেলফি তুলতে শুরু করেন । নানা ভঙ্গিতে নিজস্বী নেওয়ার সময় অসাবধনতাবশত তাঁর চুল আটকে যায় নাগরদোলার পিলারে ।
আরও পড়ুন: রুদ্রদেবের গাজন ! মানুষের খুলি নিয়ে নাচ ভক্তদের
নাগরদোলা চলাকালীন চুল পিলারে আটকে যাওয়ায় 25 ফুট ওপর থেকে নীচে পড়ে যান প্রিয়াঙ্কা । দুর্ঘটনাটি দেখতে পেয়েই ছুটে আসেন স্থানীরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ এসে ওই প্রিয়াঙ্কাকে উদ্ধার করে। এরপর তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতায় উদ্দেশ্যে। তবে কলকাতায় পৌঁছনোর আগেই রাস্তাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন 20 বছরের প্রিয়াঙ্কা। মেয়ের মৃত্যুতে শোকের ছায়া পরিবার-পরিজনদের মধ্যে।
সতীশ দাস নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ''সকালের দিক হওয়ায় তখনও নাগরদোলাতে খুব একটা বেশি ভিড় জমেনি। হঠাৎই দেখলাম শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ছুটে গিয়ে দেখি এক যুবতীর চুল-সহ মাথার খুলির চামড়া নাগরদোলার পিলারে আটকে পড়েছে।'' প্রিয়াংশু গোস্বামী নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ''এক মুহূর্তে কীভাবে এইসব ঘটে গেল বোঝাই গেল না। নিমেষের মধ্যে লোক জড়ো হয়ে গিয়েছিল। এরপর পুলিশের সাহায্যে উদ্ধার কার্য শুরু হয়। খুব বাজে অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই তরুণীকে।''