বিষ্ণুপুর, 4 ফেব্রুয়ারি : গান-বাজনা ও মতিচুর এই দুই নিয়ে মন্দিরনগরী বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ৷ শক্তিগড়ের ল্যাংচা বা বর্ধমানের মিহিদানা যেমন বিখ্যাত ৷ তেমনি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের প্রসিদ্ধ মোতিচুরের লাড্ডুও বিখ্যাত (Motichur Laddu Special) ৷ সেই মোতিচুরের লাড্ডুর জিআই স্বীকৃতি বা ভৌগোলিক পরিচয়ের দাবি জানাল বিষ্ণুপুরবাসী (People of Bishnupur Demand GI Status for Motichur Laddu) ৷ কয়েক শত বছর আগে বিষ্ণুপুরে একছত্র অধিপত্য বিস্তার করেছিল মল্ল রাজারা ৷ আর মল্ল রাজাদের স্থাপত্য, ভাস্কর্য এখনও বিষ্ণুপুরের আনাচে-কানাচে চোখে পড়ে ৷
মল্ল রাজারা শুধু স্থাপত্য তৈরিতে থেমে থাকেননি ৷ তাঁদের রসবোধ ও সাংস্কৃতিক চর্চার কথাও ইতিহাসে খুঁজলে পাওয়া যায় ৷ মল্লরাজাদের উপাস্য দেবতা ছিলেন রাধাগোবিন্দ ৷ এক মল্ল রাজার আমলে রাজ মোদককে উপাস্য দেবতার জন্য আলাদা ধরনের মিষ্টি ভোগ হিসেবে তৈরি করতে বলেছিলেন ৷ রাজার আদেশমতো রাজ মোদক পিয়াল গাছের বীজ থেকে তৈরি করেছিলেন এক ধরনের বেসন ৷ সেই বেসন দিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ লাড্ডু ৷ পিয়াল বীজের বেসনে লাড্ডুর যে দানাগুলি তৈরি হত, সেগুলি মিহিদানার থেকে আকারে একটু বড় ছিল ৷ আর মোতির মতো চকচক করত বলে ওই লাড্ডুর নাম রাখায় হয় মোতিচুর ৷
আরও পড়ুন : Mukutmanipur : করোনা সংক্রমণ কমতেই ছন্দে ফিরছে মুকুটমণিপুর
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পিয়াল গাছ আর নেই ৷ তাই পিয়াল ফলের বীজ থেকে আর বেসনও তৈরি করা হয় না ৷ এখন মটর ডালের বেসনের সঙ্গে গাওয়া ঘি মিশিয়ে বংশ পরম্পরায় একইভাবে মল্লগড় বিষ্ণুপুরের মোদকেরা মোতিচুরের লাড্ডু তৈরি করে আসছেন ৷ বিষ্ণুপুরের মোদকদের একাংশের দাবি, যেভাবে শক্তিগড়ের ল্যাংচা ও বর্ধমানের মিহিদানা ভারত সরকারের জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে ৷ সেইভাবেই জিআই স্বীকৃতি পাক বিষ্ণুপুরের মোতিচুরের লাড্ডু ৷