বাঁকুড়া, 27 সেপ্টেম্বর: বাঁকুড়ার দু'নম্বর ব্লকের কষ্টিয়া গ্রাম, সেখানে গেলেই দেখা মিলবে শীট পরিবারের (Durga Puja in Kostia Village) অহংকারের নিদর্শন। যার মধ্যে অন্যতম দুর্গাপুজো ৷ শীট পরিবারের পুজোতেই দুর্গোৎসবের চারটে দিন গ্রামবাসীদের সমস্ত আবেগ (Shit Family's Durga Puja)।
বর্ধিষ্ণু পরিবারের সন্তান, সার্থক শীট মেষ চরানোর জন্য বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থেকে এসে উপস্থিত হন এই কষ্টিয়া গ্রামে। কথিত রয়েছে, কষ্টিয়া গ্রামে আসা সার্থক শীট একদিন মেষ চরাতে চরাতে বট গাছের তলায় ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ৷ সেখানেই মা দুর্গা স্বপ্ন দেন তাঁকে প্রতিষ্ঠার জন্য ৷ তারপর একটি চালা করে মা দুর্গার পুজো সারেন তিনি ৷ ব্যস! তারপরেই ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন হয়ে বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন এই সার্থক শীট।
তারপর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে একের পর এক জমি কিনে কয়েক হাজার হেক্টর বনভূমির মালিক হয়ে ওঠেন। সার্থক শীটের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তিনি আড়ম্বর করে চালু করেন মা দুর্গার পুজো, প্রতিষ্ঠিত হয় মা দুর্গার বিশাল নাটমন্দির। এই পুজোর বিশেষ বৈচিত্র্য ছিল আরেকটি ৷ তা হল পুজোকে কেন্দ্র করে দিনের বেলায় যাত্রানুষ্ঠান।
দিনের বেলায় যাত্রা অনুষ্ঠান শুনে অবাক হচ্ছেন তো? এই দিনের বেলার যাত্রার পিছনে একটা অন্যতম কারণ ছিল বন-জঙ্গলে বেষ্টিত এই কষ্টিয়া গ্রামে বুনো হাতির উপদ্রব প্রায়শই লেগে থাকত ৷ তাই বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা প্রজারা যাতে দিনের আলো থাকার মধ্যে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন তার জন্যই এই ব্যবস্থাপনা ছিল ৷ এখন যাত্রাপালা বন্ধ হয়ে গেলেও বিজয়ার দিনে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই পুজোকে কেন্দ্র করে সারা গাঁয়ে খাওয়ানো হতো মায়ের ভোগ, প্রসাদ ৷ আনন্দে মেতে উঠতেন তৎকালীন প্রজারা।
আরও পড়ুন: মহম্মদ আলি পার্কের পুজোর থিম রাজস্থানের শিস মহল
সম্পত্তি সরকারের হাতে চলে যাওয়ায় মধ্যস্বত্ব অনেকটা হ্রাস পেয়েছে ৷ জৌলুস আগের থেকে অনেকটা ফিকে হলেও 350 বছর ধরে চলে আসছে এই পুজো। রুজির টানে গ্রামের যে সমস্ত মানুষ বাইরে থাকেন তাঁরা আজও আসেন এই পুজোকে উপভোগ করতে ৷ পুজোর চারটে দিন আনন্দে মেতে ওঠেন তাঁরা (Durga Puja 2022)।