বেলিয়াতোড় (বাঁকুড়া), 19 মে : করোনার সময়ে আক্রান্তদের প্রতি অবহেলার একাধিক অভিযোগ উঠেছে । করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এ আক্রান্তদের কেউ এড়িয়ে চলছেন, কেউ আবার তাঁদের সাহায্য করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছেন । তেমনি করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বছর ছাব্বিশের যুবক হারাধন কর্মকার । দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে ছুটে যাচ্ছেন অতিমারি কবলিত মানুষগুলোর কাছে ৷ বাড়িয়ে দিচ্ছেন সাহায্যের হাত এবং বারবার বুঝিয়ে দিচ্ছেন, তিনি তাঁদেরই একজন ।
ছোট থেকেই হারাধনের স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশ সেবা করার । কিন্তু তাঁর উচ্চতা বাধ সাধে ৷ তাই সেই স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে গেছে । তবে, বাহিনীতে যোগ না দিয়েও যে দেশ সেবা করা যায়, হারাধন সেটা প্রমাণ করেছেন সমাজ সেবার মাধ্যমে । আর তাঁর সেই সমাজ সেবা আরও গতি পেয়েছে এই করোনার সময়ে ৷ নিজের প্রিয়জন বা প্রতিবেশী কেউ আক্রান্ত হলে অনেকেই মুখ ঘুরিয়ে থাকেন ৷ তবে, হারান ঠিক উল্টো ৷ হারাধনের পাশের গ্রাম মাধবপুরে আক্রান্ত হয়েছিলেন গোটা একটি পরিবার । তাঁদের পানীয় জলটুকুও দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল । জানতে পেরে তড়িঘড়ি করে এগিয়ে যান হারাধন ৷ পৌঁছে দিচ্ছেন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস । এমনকি আক্রান্তদের গাড়ি ভাড়া করে কোভিড পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালে ভর্তি সব একা হাতে করছেন হারাধন কর্মকার ৷
আরও পড়ুন : গাছে আইসোলেশন থাকা যুবক করোনা মুক্ত
বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের যামিনী রায় কলেজের কলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন হারাধন কর্মকার ৷ বর্তমানে তিনি ওই কলেজের এনসিসি-র দায়িত্বে রয়েছেন । বাবা অশোক কর্মকার পেশায় একজন সাইকেল মিস্ত্রি । যাঁর অভাব নিত্যদিনের সঙ্গী ৷ তবে, তা সত্ত্বেও সমাজের জন্য করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হারাধন ৷ তিনি জানান ‘‘আমি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি মাত্র, আমার এই কাজে পরিবারের পাশাপাশি এলাকার মানুষেরও পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি এবং আগামিদিনে এভাবেই কাজ করে যাব ৷’’