বাঁকুড়া, 25 ডিসেম্বর: জন্মের পর থেকেই গুরুতর অসুস্থ কন্যাসন্তান। অসুস্থতা এতটাই গুরুতর যে তাঁকে রাখতে হয়েছে ভেন্টিলেশনে। সন্তানের এই অসুস্থতার কারণে মানসিক অবসাদে হাসপাতালেই গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা মায়ের। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগে ৷
বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত 20 ডিসেম্বর প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হন পুরুলিয়ার আদ্রা শহর লাগোয়া বেঁকো গ্রামের এক প্রসূতি। ওইদিনই তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পরই সদ্যোজাতর শারিরীক সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাকে ওই হাসপাতালেই ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সন্তানের এই অসুস্থতায় রীতিমতো ভেঙে পড়েন আত্মঘাতী হওয়া মহিলা। বারেবারে সেকথা সঙ্গে থাকা নিজের মা'কে জানিয়েছিলেন তিনি।
সোমবার সকালে মা'কে বাইরে পাঠিয়ে হাসপাতালের বেড থেকে উঠে প্রসূতি বিভাগের তিনতলায় চলে যান ওই মহিলা। সেখানে রেলিংয়ের সঙ্গে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই কন্যাসন্তানের মা। হাসপাতাল সূত্রে খবর পেয়ে, বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায়। হাসপাতালের ভিতর এভাবে রোগীর আত্মহত্যার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সদ্যোজাতের শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন সদ্য মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়া মহিলা। সোমবার সকালে মহিলা তাঁর মাকে হাসপাতালের বাইরে থেকে এক আত্মীয়াকে ডেকে আনতে বলেন। মা কিছুক্ষণ পরে সেই আত্মীয়াকে ডেকে ওয়ার্ডে ফিরে এলে আর নিজের বেডে দেখতে পাননি। এরপর হাসপাতালে খোঁজ শুরু হয়। পরে পরিবারের লোকজন দেখেন, হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের তিন তলায় রেলিংয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে মায়ের দেহ। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: