বাঁকুড়া, 28 মার্চ: বাঁকুড়া জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম সাবড়াকোন। আর এই গ্রামেরই বাসিন্দা গৃহবধূ বৃষ্টি অর্থাৎ সুপ্রিয়া পাল (Educated Hawker In Bankura)। ভূগোলের স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি নিয়েছেন বিএড ডিগ্রিও। যদিও পাননি কোনও চাকরি ৷ কিন্তু চরম আর্থিক দুরবস্থার মধ্যেই দিনকাটে তাঁর ৷ আর্থিক দুরবস্থা ফেরাতে সংসার সামলে তাঁকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছে জীবনযুদ্ধে।
বৃষ্টির জীবনযুদ্ধটা বিয়ের পরে নয়, বিয়ের আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই তাঁর বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত হন। সাংসারিক জীবনে অভাব-অনটনের পাশাপাশি চলতে থাকে তাঁর পড়াশুনো। তিনি চেষ্টা চালান স্বাবলম্বী হতে ৷ জীবিকা হিসেবে বেছে নেন মেয়েদের পোশাক বিক্রি করার কাজকে। বিয়ের পর স্বামীর ঘরে এলেও তাঁর অনটন কাটেনি। তাঁর স্বামী পেশায় একজন বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলেন ৷ কিন্তু হঠাৎই সেই সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে নেমে আসে চরম আর্থিক সঙ্কট। তাই, সংসারকে বাঁচাতে বৃষ্টি বেছে নেন তাঁর পুরনো পোশাক বিক্রি করার কাজকেই।
আরও পড়ুন: শালতোড়ায় বিদ্যুতের টাওয়ারে চড়ে বসা ব্যক্তিকে উদ্ধার করল প্রশাসন
রোজ সকালে বৃষ্টি বাস ধরে যান পিয়ারডোবা স্টেশনে। সেই স্টেশন থেকে কখনও মেদিনীপুরগামী বা কখনও বাঁকুড়াগামী ট্রেনে ফেরি করতে থাকেন মহিলাদের পোশাক। ট্রেনের নিত্যযাত্রীরাই তাঁর ক্রেতা ৷ সবাই এক নামে চেনেন বৃষ্টিকে। বর্তমানে বেকারত্বের জ্বালায় সবাই যেখানে জেরবার। সেখানে এই বৃষ্টির মতো গৃহবধূরাই পথ দেখায় জীবনের চড়াই-উতরাইকে কীভাবে সামাল দিতে হয়। এইরকম হয়ত হাজার বৃষ্টির সংগ্রাম চলছে মানুষের দৃষ্টির অগোচরে।