বাঁকুড়া, 14 মে: বর্ষা এলেই দামোদরের চরের নিকটবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের চোখে নেমে আসে অন্ধকার ৷ বর্ষার জলে হৃষ্ট-পুষ্ট দামোদরের চোখরাঙানি ব্যাপক দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে বহু গ্রামের বাসিন্দাদের ৷ অভিযোগ ছিল, দামোদর নদের পাড়গুলি না-বাঁধানোর ফলে প্রতিবছর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় গ্রামগুলি ৷ এবার সেই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নিল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন ৷ বর্ষার আগে কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে শুরু হল চর বাঁধানোর কাজ ৷
দামোদর নদের বাঁধ নিয়ম মাফিক মেরামত না-করার ফলে প্রতিবছর বর্ষায় ভাঙন দেখা দেয় ৷ ফল, গ্রামের পর গ্রাম দামোদরের গ্রাসে চলে যায় ৷ প্রাণহানি থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি ভেসে যায় দরিদ্র মানুষের ৷ ক্ষতি হয় ফসলের, ভেসে যায় গবাদি পশু ৷ আর ভোট এলে রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিশ্রুতি শুধু মিলত ৷ অবশেষে গ্রামবাসীদের সেই সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রসাশন ৷ দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নদের চর থেকে বাঁধ পর্যন্ত মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে ৷ কাঠের গুড়ি দিয়ে চরের উপর থেকে বাড়ানো হচ্ছে বাঁধের আয়তন ৷ বাঁধ মেরামতির দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, প্রায় 1 কোটি 78 লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে ৷
কিন্তু, এখানেও শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা ৷ তবে, শুধু তরজা নয়, এই কাজের কৃতিত্ব কারা নেবে ? সেই নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু করেছে তৃণমূল ও বিজেপি ৷ সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি দাবি করেছেন, তিনি প্রথম বিধানসভায় দামোদরের বাঁধ মেরামতির কথা তুলেছিলেন ৷ তার পরেই এই কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান বিধায়ক ৷ এমনকী এই বাঁধ মেরামতির কাজে তৃণমূলের নেতারা কাটমানি খাচ্ছেন কিনা, সেই হিসেবও তিনি রাখবেন বলে জানান দিবাকর ঘরামি ৷
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েও বাঁধ পরিদর্শনে গেলেন না মন্ত্রী, হতাশ এলাকাবাসী
বিজেপি বিধায়ক সব কৃতিত্ব নিয়ে যাবেন ! এমনটা হয় নাকি ৷ তাই আসরে নেমে পড়েছে শাসকদলের প্রতিনিধিরাও ৷ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আনুমিত মণ্ডল পালটা দাবি করেছেন, তৃণমূলের তরফে বারংবার ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে আবেদন করার পর এই কাজ শুরু হয়েছে ৷ আর সোনামুখীর বিধায়ক একদিন দামোদরের চরে বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন ৷ ওই পঞ্চায়েত সদস্যের মতে, বিধায়ক যদি একদিন পরিদর্শনে এসে দাবি করেন, তাঁর জন্য বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে তাহলে কিছুই বলার নেই ৷