বাঁকুড়া, 7 এপ্রিল : কোরোনা পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকতে হবে প্রসূতিদের । রীতিমতো কোয়ারানটাইনে থাকতে হবে তাঁদের । এমনই পরামর্শ দিচ্ছেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা । তাঁদের মতে, উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতিতে প্রসূতিদের নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই । তবে কোরোনা সংক্রমণ এড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ মেনে চলতে হবে প্রসূতি এবং প্রসূতির পরিবারকে ।
বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অনিন্দ্য দাসের কথায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রসূতিদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে বেশ কয়েকটি বিষয়ে। প্রথমত, লকডাউন সম্পূর্ণভাবে তাঁদের পালন করতে হবে এবং বাড়ির বাইরে না বেরোলেই ভালো। 2 ঘণ্টা অন্তর সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে তাঁদের। নিজেদেরকে একপ্রকার কোয়ারানটাইনে রাখতে হবে। এই অবস্থায় বাড়ির অন্য সদস্যরা তাঁর থেকে যেন যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন। বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় মনে রাখতে হবে সেই সদস্যরা যেন মুখে মাস্ক ব্যবহার করেন। যেহেতু প্রসূতি অবস্থায় মহিলাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা যথেষ্ট কম থাকে, তাই তাঁদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ খুব তাড়াতাড়ি হতে পারে ।
অধ্যাপক দাস বলেন, "এখনও পর্যন্ত যে তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পাওয়া গেছে, সেই অনুযায়ী কোনও কারণে যদি কোনও প্রসূতি কোরোনা সংক্রমিত হয়ে পড়েন, সেক্ষেত্রে তাঁর সন্তানের সংক্রমিত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে এই সংক্রমণের ফলে প্রসূতির শারীরিকভাবে কোনও ক্ষতি হলে তার প্রভাব অবশ্যই পড়বে নবজাতকের উপর।" এবিষয়ে কলেজের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, "ডাক্তারের উপদেশ সঠিকভাবে মেনে চললে কোনওরকম ভয়ের কারণ নেই প্রসূতিদের।"
বিগত কয়েক বছর ধরে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রসূতিরা যে সংখ্যক নবজাতকের জন্ম দিয়েছেন তা শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে সর্বোচ্চ। প্রতিদিন গড়ে 65-70 জন প্রসূতি নবজাতকের জন্ম দেন এখানে । বার্ষিক হিসেব অনুযায়ী 23 হাজারেরও বেশি। এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাঁকুড়া এবং বাঁকুড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও প্রসূতি বিভাগের সক্রিয়তা অনেকাংশে কমে গিয়েছে। ফলে প্রতিদিন প্রসূতি বিভাগের অতিরিক্ত চাপ তৈরি হচ্ছে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেক্ষেত্রেও হাসপাতালের পরিকাঠামো এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন এবং কোনওরকম সমস্যা তৈরি হবে না বলেও জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ।