বাঁকুড়া, 16 নভেম্বর: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে আরও একবার বিজেপির (BJP) বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার বাড়িতে গেলেন তদন্তকারীরা ৷ কল্যাণীর এইমসে নিয়োগ ঘিরে যে দুর্নীতির (Kalyani AIIMS Recruitment Scam) অভিযোগ উঠেছে, তারই তদন্তে বুধবার তদন্তকারীরা বাঁকুড়ার বিধায়কের বাড়িতে যান ৷ এই ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি (CID) ৷ এর আগেও সিআইডি আধিকারিকরা ওই বিজেপির বিধায়কের বাড়িতে তদন্তের জন্য গিয়েছিলেন ৷
এদিন প্রায় ঘণ্টাখানেক সেখানে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা ৷ তাঁরা অবশ্য এই নিয়ে কোনও কিছুই বলতে চাননি ৷ তবে জানা গিয়েছে যে নীলাদ্রিশেখরের মেয়ে মৈত্রী দানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সেখানে যান সিআইডির চারজন গোয়েন্দা ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, কল্যাণীর এইমসে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে কয়েকমাস আগে ৷ অভিযোগ, বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা (BJP MLA Niladri Sekhar Dana) প্রভাব খাটিয়ে নিজের মেয়ে মৈত্রীকে এইমসে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন ৷ সেই নিয়ে এর আগে একাধিকবার সিআইডির গোয়েন্দা দানার বাড়িতে গিয়েছিলেন ৷
এদিন মৈত্রী দানার আইনজীবী শুভাশিস দে বলেন, ‘‘ঠিক কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, আমি জানি না । তবে আমার মক্কেল জানিয়েছেন- তাঁর বাবাকে ভবানী ভবনে সিআইডি-র তরফে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল । তিনি যা উত্তর দিয়েছিলেন, তা 'ক্রস চেক' করতেই এদিন ফের সিআইডি-র প্রতিনিধি দলটির বাঁকুড়ায় আসা ।’’
একই সঙ্গে শুভাশিস দে বলেন, ‘‘প্রয়োজনে তাঁরা আবারও আসতে পারেন । তবে আমার মক্কেল মৈত্রী দানা কল্যাণী এইমসে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতেন । গত অগস্ট মাস থেকে ওই চুক্তির পুনর্নবীকরণ না হওয়ায় বর্তমানে তিনি ওই কাজে যুক্ত নন ৷’’
প্রসঙ্গত, রাজ্যে শিক্ষক থেকে গ্রুপ-সি ও ডি বিভাগে কর্মী নিয়োগ ঘিরে দুর্নীতির (Bengal Recruitment Scam) অভিযোগ উঠেছে আগেই ৷ এই নিয়ে আদালতের নির্দেশে মামলা করছে সিবিআই (CBI) ৷ ইতিমধ্যে সেই দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), মানিক ভট্টাচার্যের মতো তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতারা ৷ এই দুর্নীতি নিয়ে রোজই সরব হয় বিরোধী দল বিজেপি ৷
আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতিয়ার কল্যাণীর এইমসে নিয়োগ দুর্নীতি ৷ রাজ্যে শাসক দল এই নিয়ে কেন্দ্রের শাসক দলের প্রায়ই সমালোচনা করে ৷ কিন্তু গেরুয়া শিবিরের দাবি, এই দুর্নীতির অভিযোগ আসলে তাদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের রাজনৈতিক চক্রান্ত ৷
বুধবারও সেই একই কথা শোনা গিয়েছে বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর দানার গলাতেও ৷ তিনি বলেন, ‘‘হাজার বার আসুক । ছোটো করার অপচেষ্টা চলছে । চার মাসের চুক্তিতে মেয়ে নিয়োগ হয়েছিল । 40 বছরের রাজনৈতিক জীবনে অনেকবার মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে ।’’ এর সঙ্গে তাঁর সংযোজন, পৃথিবীটা গোল ৷ তাঁরও সুযোগ একদিন আসবে ৷
আরও পড়ুন: কল্যাণী এইমসের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের আর্জি খারিজ হাইকোর্টের