বাঁকুড়া, 8 অক্টোবর: হাতে সময় বলতে মেরেকেটে সপ্তাহখানেক ৷ কিছুদিন পরেই মণ্ডপে মণ্ডপে আসতে শুরু করবে প্রতিমা ৷ তবে বিগত কয়েকদিন ধরে রাজ্য জুড়ে দেখা দিয়েছিল বৃষ্টির ভ্রুকুটি ৷ যা ঘুম উড়িয়েছিল মৃৎশিল্পীদের ৷ তবে অবশেষে কেটেছে নিম্নচাপের কালো ছায়া ৷ দেখা মিলেছে সূর্য্যিমামার ৷ রোদঝলমলে আকাশে ফের পুজো পুজো রব ৷ বরুণদেব বঙ্গ থেকে বিদায় নেওয়ায় মুখে হাসি ফুটেছে বাঁকুড়া দু'নম্বর ব্লকের শুশনিডাঙার মৃৎশিল্পীদের ৷
শিল্পী পিন্টু দাস বলেন, "এখনও পর্যন্ত আমাদের চিন্তা সম্পূর্ণভাবে কেটে যায়নি ৷ রোদ বেরিয়েছে তাতে প্রতিমার মাটি শুকনোর কাজ চলছে জোরকদমে ৷ তবে আমাদের জানা নেই ঠিকসময়ে প্রতিমা মণ্ডপে পৌঁছতে পারব কি না ৷ মা মৃন্ময়ীকে পৌঁছনোর পরেও মণ্ডপে গিয়ে শেষ তুলির টান দিতে হতে পারে ।"
গত শনিবার থেকে পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলা-সহ বাঁকুড়া জেলাতে নিম্নচাপের দুর্যোগ দেখা দিয়েছিল ৷ পুজোর মরশুমে এই আবহাওয়া চোখের জল ঝরিয়েছিল মৃৎশিল্পীদের । বাপ ঠাকুরদাদার আমল থেকে বছরভর বিভিন্ন পুজোতে মূর্তি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে বাঁকুড়া দু'নম্বর ব্লকের শুশনিডাঙার এই মৃৎশিল্পীরা । এই বছরও সারা জেলার বিভিন্ন দুর্গা মণ্ডপ থেকে প্রতিমার তৈরির বরাত মিলেছে তাঁদের । কিন্তু টানা চার-পাঁচ দিনব্যাপী আকাশে কালো মেঘ আর অঝোর বৃষ্টিপাত যেন তাদের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল । কীভাবে প্রতিমার তৈরির বরাত সরবরাহ করবে, তা নিয়ে রীতিমতো কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে গিয়েছিল শিল্পীদের ।
হয়তো ক্ষণিকের জন্য হলেও তারা ভেবেই ফেলেছিল এই বছর আর সময়ে প্রতিমা দিতে পারা যাবে না । কিন্তু কথায় আছে না 'মেঘের আড়ালেই সূর্য্য হাসে', সেটাই সত্যি করে খিলখিলিয়ে হাসছে রবি ৷ তাই এর সঙ্গেই ফের আর একবার ছন্দে ফিরেছে বাঁকুড়ার ছোট্ট এই কুমোরটুলি । তবে টানা চার-পাঁচ দিন বৃষ্টির ঘনঘটার জেরে এ বছর অন্যান্যবারের তুলনায় ব্যস্ততা আরও তুঙ্গে ৷ নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিনরাত এক করে প্রতিমার কাজ শেষ করছেন মৃৎশিল্পীরা ৷ তাদের এখন একটাই লক্ষ্য সময়ে প্রতিমা মণ্ডপে পৌঁছে দেওয়া ।
আরও পড়ুন: লক্ষ্যে পৌঁছতে সোজা না বাঁকা পথ ? অ্যামবিশন নিয়ে দর্শককে ভাবাবে কুমোরটুলি পার্ক সর্বজনীন
মৃৎশিল্পী উমা দাস বলেন, "বৃষ্টির জন্য প্রতিমা গড়তে অসুবিধা হয়েছে ৷ তবে রোদের দেখা মিলতে আবার মূর্তি শুকনো হচ্ছে ৷ এখন শুধু সময়ে ঠাকুর মণ্ডপে পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য ৷ রোদ বেরতে একটু চিন্তামুক্ত হয়েছি ৷" মণ্ডপে মণ্ডপে মায়ের আগমন এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা ৷ তার আগে কিছুটা দুশ্চিন্তার ভাজ মৃৎশিল্পীদের কপালে থাকলেও এতকিছুর পরেও তারা আশাবাদী সবকিছু ঠিকঠাক হবে ৷ মুখ রক্ষা হবে তাঁদের ।