আলিপুরদুয়ার,20 জুন : গভীর রাতে ঘুমের মধ্যে থাকা দুই কন্যা ও স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, খুনের পর মৃত দুই মেয়েকে প্লাস্টিকে এবং স্ত্রীকে তোষোকে মুড়ে ফেলে ওই ব্যক্তি ৷ তারপর ভ্যানে বসিয়ে তিনটি দেহ ভাসিয়ে দেয় নদীতে। এরপর নিজে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় । শনিবার দুপুরে রায়ডাক নদী থেকে তিনজনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার রেলপুলিশ রেল লাইনের ধার থেকে ওই ব্যাক্তির দ্বিখণ্ডিত দেহ উদ্ধার করে । আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর ব্লকের ভাটিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর চিকলিগুড়ির পাল পাড়ার ঘটনা ।
গতমাসেই আলিপুরদুয়ার পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের নিউটাউন দুর্গাবাড়ি এলাকার অবকাশ রোডের এক বাড়িতে স্ত্রী ও পুত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নিজে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় একজন । মাস ঘুরতে না ঘুরতেই ফের সপরিবারে এমন মৃত্যুর ঘটনা । পাল পাড়ার বাসিন্দা পেশায় কুমোর পিঙকু পালের (45), স্ত্রী জয়ন্তী পাল(35), বড় মেয়ে পায়েল ও ছোটো মেয়ে কোয়েলকে নিয়ে থাকতেন । ঠেলাভ্যান করে পিঙকু পাল মাটির জিনিস ফেরি করে সংসার চালাত । লকডাউনের জেরে তাঁর ব্যবস্যা বন্ধ হয়ে যায় । চরম আর্থিক সংকটে পড়ে যান পিঙকু । স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, অনটনের কারণে সবাইকে খুন করে আত্মহত্যা করেছে পিঙ্কু ।
আজ সকাল 10 টা নাগাদ পশ্চিম চিকলিগুড়ির রায়ডাক নদী থেকে পায়েলের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুপুর বারোটায় শামুকতলা রোড স্টেশনের ধারসি নদীর ব্রিজের কাছে পিঙকু পালের দ্বিখণ্ডিত দেহ উদ্ধার হয় পিঙকু পালের দেহ উদ্ধারের পর কোচবিহার জেলার বক্সিরহাট থানার ধলপলের রায়ডাক নদী থেকে উদ্ধার হয় জয়ন্তীর মৃতদেহ । তারপর বিকেল পাঁচটায় কোচবিহারের তুফানগঞ্জের রায়ডাক নদী থেকে উদ্ধার হয় কোয়েলের মৃতদেহ।
একই পরিবারের চারটি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। আলিপুরদুয়ার SDPO কুতুবুদ্দিন খান জানান ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ওই ব্যাক্তি প্রথমে তিন জনকে শ্বাসরোধ করে খুন করে । পরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে । মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা অনুমান করছেন, বৃ্হস্পতিবার রাতেই পিঙকু পাল তার দুই কন্যা ও স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে । আলিপুরদুয়ার দুই ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস বলেন,"খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। ঘটনার তদন্তে নেমেছে জেলা পুলিশ। তদন্তের পরই বলা যাবে আসলে কী ঘটেছিল।"